আজ মণিপুরে তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম, বিরোধী বৈঠকের পরই ছুড়ল চ্যালেঞ্জ

পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে দু’‌দফায় বাংলায় এসেছে বিজেপির প্রতিনিধিদল। একবার রবিশংকর প্রসাদের নেতৃত্বে। আর দ্বিতীয়টি পাঁচজন বিজেপি মহিলা সাংসদের প্রতিনিধিদল। তাই পাল্টা এবার মণিপুর পৌঁছতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। আজ, বুধবার সকাল ১০টায় কলকাতা থেকে মণিপুরে যাবে প্রতিনিধি দলটি। বেলা ১১.২০ মিনিটে ইম্ফলে পৌঁছবে দলটি। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’‌ব্রায়েনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল মণিপুর যাচ্ছেন। সেই দলে রয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং সুস্মিতা দেব।

এদিকে বিরোধীদের বৈঠক থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আওয়াজ তুলেছেন, বিজেপি কি পারবে ভারতের বিরুদ্ধে লড়তে?‌ হিম্মত থাকলে লড়াই করুক। বিরোধীদের এই মহাজোটের নাম হয়েছে ইন্ডিয়া। বাংলায় বিজেপির প্রতিনিধিদল পাঠানো হলেও মণিপুরে সেটা করতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। অথচ গত তিন মাস পেরিয়ে গেলেও উত্তপ্ত রয়েছে মণিপুর। মেইতেই জাতিগোষ্ঠীকে তফসিলি জাতিভুক্ত করা যায় কি না সেটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় এবং তা নিয়েই অশান্তির সূত্রপাত। কারণ হাইকোর্টের এই রায় মেনে নিতে রাজি নয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষজন। তাই মণিপুরে হিংসা অব্যাহত। সেখানেই এবার যাচ্ছে তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। যা বিজেপির কাছে কার্যত চ্যালেঞ্জ।

অন্যদিকে এই ইস্যুতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ এবং তাতে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে মণিপুর। রক্তাক্ত হয়েছে সেখানকার রাজপথ। বহু মানুষ এখন ঘরছাড়া। কুকি–মেইতেইর মধ্যে গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলছে। তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। একবার সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গিয়েছিলেন। তারপরও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। বরং অশান্তির মাত্রা বেড়েই চলেছে। ঘরছাড়া রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছে মণিপুর সরকার। ডবল ইঞ্জিনের সরকার থাকা সত্ত্বেও কেন এমন হাল হল?‌ প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আরও পড়ুন:‌ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিচার প্রক্রিয়ায় অনুমোদন রাজ্যপালের, ট্রায়ালে আর বাধা রইল না

আসল বিষয়টি ঠিক কী?‌ মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি ও নাগা জনগোষ্ঠীর বিরোধ চলছে। এটাই প্রথম বিষয়। দ্বিতীয় বিষয় হল, তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হতে চেয়ে দাবি তুলেছে মেইতেই সম্প্রদায়। মণিপুরের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫৩ শতাংশ মেইতেইরা। ইম্ফল উপত্যকায় এদের বসবাস করতে দেখা যায়। সেখানে নাগা আর কুকিরা মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশ। এরাও মণিপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করেন। তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হতে চাওয়ায় মামলা হয় হাইকোর্টে। কিন্তু আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে ফুঁসে উঠেছেন তাঁরা। তুমুল সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন হিংসার বলি হয়েছেন।