সমস্ত জেলা হাসপাতালে বসতে চলেছে মিউজিক সিস্টেম, মন ভালো করার ওষুধ

বাংলায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলিতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিতে চলেছে সরকার। সমস্ত জেলা হাসপাতালে বসতে চলেছে বড় টেলিভিশন, মিউজিক সিস্টেম। উদ্দেশ্য মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসার কথা ভাবছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। মানসিক সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলতে সঙ্গীত অনেক ক্ষেত্রেই থেরাপির কাজ করে, বর্তমান গবেষণায় এর প্রমাণও মিলেছে। এই গান-সুর-কথার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের প্রতিদিনের যাপন থেকে স্বাস্থ্য। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, সঙ্গীত স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নয়নে সঙ্গীতের জুড়ি মেলা ভার।

আসুন জেনে নিই মানসিক স্বাস্থ্য়ের উন্নতিতে কী ভাবে কাজ করে সঙ্গীত। আজকের সময়ে কেবল মাত্র ভারত নয়, উন্নত বিশ্বের দেশগুলিতেও মানসিক অসুস্থতা এক চিন্তার কারণ। হতাশাগ্রস্ত অবসাদে থাকা কোনও ব্যক্তির মনে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করে গান। এছাড়াও একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ মানসিকতা গড়ে তুলতেও সঙ্গীতের কোনও বিকল্প নেই। তার প্রিয় গানের কথা সুর মানুষের আবেগ-অনুভূতি, ভাবনাকে প্রভাবিত করে। মন খারাপের সময়ে তার মন ভালো করে দেয় চেনা সুর, চেনা কথাগুলি। গান শোনার অভ্যেস কাজের প্রতি অনেক বেশি মনোযোগী করে তোলে কোনও ব্যক্তিকে, মত বিশেষজ্ঞদের।

মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সঙ্গীতের জুড়ি মেলা ভার। বিশেষজ্ঞদের মতে, মেন্টাল স্ট্রেস দূর করতে আপনার পথ্য তবে পারে গান। ধীর লয়ের মেলোডি হোক কিংবা পছন্দের কোনও গান, পাশে চলতে থাকা গানের সঙ্গে গুনগুন করে গাইতে গাইতে আপনার মন ভালো হয়ে যায় অচিরেই। চিকিৎসকরা অবশ্য স্ট্রেস দূর করতে অত্যধিক জোরে গান না শোনারই পরামর্শ দিচ্ছেন। মস্তিষ্ককে চাপমুক্ত রাখে এমন ভলিউমে গান শুনতেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিটি মানুষের মন জগতে বাস করে সৃজনশীল এক সত্তা। এই শিল্পসত্তাকে বের করে আনে সঙ্গীত। বিশেষজ্ঞরা তাই যেকোনও কাজের সময়ই হালকা গান চালিয়ে রাখার পরামর্শ দেন। এতে মস্তিষ্ক চাপমুক্ত ও সচল থাকে। যেকোনও কাজ করার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। 

শিশুমনের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে সঙ্গীত। মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য অংশের সংযোগে সাহায্য করে গান। সঙ্গীতের লিরিক থেকে নতুন শব্দ শিখতে পারে কোনও শিশু। মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে গান। ফলে লেখাপড়া বা অন্য যেকোনও কিছুতেই অনেক বেশি মনোযোগী করে তোলে। শিশুবয়স থেকে সঙ্গীতের সঙ্গে পরিচিতি ঘটলে মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি সৃজনশীল মানুষ গড়ে ওঠে। আজকের দিনে মানসিক অসুস্থতার প্রবণতা বৃদ্ধির সময়ে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ প্রাথমিক ভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে।