ইউক্রেন নিয়ে আরও শান্তি আলোচনা চায় চীন

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার কাঠামোর খুঁজে সৌদি আরবে চলমান আলোচনার পরও আরেক দফা  এমন উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান রবিবার এ খবর জানিয়েছে। শনিবার শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী আলোচনায় ৪০টি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সিনিয়র কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। 

ইউক্রেন নিয়ে সৌদি আরবে এমন আলোচনা দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ডেনমার্কের কোপেনেহগেনে প্রথম দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনার লক্ষ্য হলো ইউক্রেনে রাশিয়া যুদ্ধ কীভাবে অবসান হতে পারে, সেটির নীতির খসড়া তৈরি করা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি আশা করেন এই বৈঠকের ফলে যুদ্ধ অবসানের জন্য তার প্রস্তাবিত ১০  দফার নীতিগুলোকে সমর্থনে বছরের শেষ দিকে বিশ্বনেতাদের একটি শীর্ষ শান্তি সম্মেলন আয়োজন  সম্ভব হবে।

সৌদি আরবের আলোচনায় রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতে অংশ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীনের ইউরেশিয়া-বিষয়ক বিশেষ দূত লি হুই।

বৈঠক শুরুর আগে লি বলেছিলেন, আমাদের বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। আমরা ভিন্ন অবস্থানের কথা শুনেছি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের নীতিগুলো বিনিময় করা।

জেলেনস্কির প্রস্তাবিত দশ দফায় ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার এবং সোভিয়েত পরবর্তী ইউক্রেনীয় সীমানা পুনর্বহালের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের একটি সূত্র আল আরাবিয়া ও আল হাদাত নিউজ চ্যানেলকে জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি দেশ এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে।

জুনে কোপেনহেগেনের মতো জেদ্দাতেও আলোচনা ছিল অনানুষ্ঠানিক। ফলে বৈঠকের কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হবে না। ইউক্রেনীয় সূত্র জানিয়েছে, কোপেনহেগেনের চেয়ে জেদ্দাতে বেশি সমর্থন পেয়েছে দশ  দফা প্রস্তাব।

একটি ইইউ সূত্র জানিয়েছে, চীন সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশ নিয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে ইতিবাচক।

এবারের বৈঠকে চীনের অংশগ্রহণকে বড় কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করছে ইউক্রেন ও দেশটির মিত্ররা। কারণ কোপেনহেগেনের আলোচনায় দেশটি অংশগ্রহণ করেনি।

বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব তেল নীতিতে চীন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে। যদিও সম্প্রতি রাশিয়া উৎপাদন হ্রাসে সম্মত না হওয়ার পর উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

মে মাসে জেদ্দায় একটি আরব শীর্ষ সম্মেলনে জেলেনস্কি কিছু নেতাকে রাশিয়ার আক্রমণের ভয়াবহতার বিষয়ে ‘চোখ বন্ধ’ রাখার জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভ্যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজেরর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তবে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা সাইমন মর্ডু ইইউর প্রতিনিধিত্ব করেছেন।