‌রাতভর নিখোঁজ আদিবাসী মহিলা, বর্ধমানের আউশগ্রামে সকালে মিলল রক্তাক্ত দেহ

আজ, বিশ্ব আদিবাসী দিবস। আর সেই সময়ই ঘটে গেল অঘটন। গতকাল রাতে এই আদিবাসী মহিলা গ্রামের এক চিকিৎসকের কাছে ওষুধ আনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর তিনি আর সারারাত বাড়ি ফেরেননি। তাঁর বাড়ি না ফেরার ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা রাস্তায় এসে খুঁজতে থাকেন। তাতেও কোনও সন্ধান মেলেনি। অথচ বুধবার সকালে ওই আদিবাসী মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। বিশ্ব আদিবাসী দিবসের দিনেই এমন ঘটনায় শিউরে উঠেছেন পূর্ব বর্ধমানের অন্তর্গত আউশগ্রামের গ্রামবাসীরা। এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে যাওয়ায় পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করেছে।

ঠিক কী ঘটেছে আউশগ্রামে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, আদিবাসী ওই মহিলা হাতে যন্ত্রণা অনুভব করছিলেন। সেটা যখন বেড়েছিল তখন তিনি গ্রামের চিকিৎসকের কাছে ওষুধ আনতে যান। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। এই দেখে পরিবারের সদস্যরা গ্রামের অন্যান্য বাড়িতে খোঁজ করেন। মাঠে, পুকুরেও খোঁজ করতে গিয়ে সন্ধান মেলেনি। কিন্তু বুধবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই ওই আদিবাসী মহিলার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনা সামনে আসতেই পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে জোর চর্চা শুরু হয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন। তখন সেখানে পুলিশ হাজির হয়।

পুলিশ ঠিক কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত মহিলার নাম সুমি সোরেন(৪৫)। সোমাইপুর গ্রামের লাইকিংপাড়ার বাসিন্দা তিনি। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। স্বামী জামরু সোরেন কয়েক বছর আগেই মারা যান। বাড়িতে রয়েছেন এক ছেলে ও পুত্রবধূ। পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর হাতের যন্ত্রণার কারণে গ্রামেরই এক চিকিৎসকের কাছে ওষুধ আনতে যান। তারপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। অনেক রাত পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। শরীরে আঘাতের ফলেই রক্তাক্ত দেহ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:‌ পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, হাসপাতাল থেকে ছুটি বুদ্ধবাবুর

আর কী জানা গিয়েছে?‌ এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। ছেলে মিঠুন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌মা বাড়ি ফিরে আসছে না দেখে আমি প্রতিবেশীদের জানাই। রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি। আজ সকালে খবর পাই মাকে কেউ খুন করেছে। মায়ের সঙ্গে কারও ঝামেলা ছিল না। কোনও শত্রু ছিল না।’‌ তবে পুলিশ দেহের পাশ থেকে একটি ছাতা ও টর্চ উদ্ধার করেছে। মাথার ডানদিকে রক্ত ও আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে।