‘‌আমি চিনি না’‌, বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে উপাচার্যকে চিন্তে পারলেন না শিক্ষামন্ত্রী

রাজ্যের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চেনেন না রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কেন উপাচার্যকে শিক্ষামন্ত্রী চেনেন না?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনার গভীরে গেলে জানা যাচ্ছে, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ম্যাকাউট) অস্থায়ী উপাচার্য গৌতম মজুমদার পদত্যাগ করেছেন। এই উপাচার্যকে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উপাচার্যের ইস্তফাপত্র রাজভবনে পৌঁছেছে বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনা নিয়ে একমাসের মধ্যে দু’জন অস্থায়ী উপাচার্য ম্যাকাউট ছেড়ে চলে গেলেন। রাজ্যপাল এখন একাই বেশ কয়েকজন অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। তা নিয়ে রাজ্য–রাজভবন সংঘাত চরমে। তাই হয়তো ব্রাত্য বসু চিনতে পারলেন না বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করে শিক্ষা দফতরকে সাইড করে দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই নিয়ে মামলা–মোকদ্দমা পর্যন্ত হয়েছে। যদিও রায় গিয়েছে রাজ্যপালের পক্ষে। তখন থেকেই সংঘাতের সূত্রপাত। সার্চ কমিটি এখন শিকেয় তুলে দিয়েছেন রাজ্যপাল বলে অভিযোগ। আর তাই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজের পছন্দ মতো অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে বসানো হয়েছে।

অন্যদিকে ম্যাকাউটের অস্থায়ী উপাচার্য গৌতম মজুমদার পদত্যাগ করার জেরে এখন চাপে পড়ে গিয়েছেন স্বয়ং রাজ্যপাল। কারণ গৌতম মজুমদারকে একতরফাভাবে বেছে নিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তার আগে অবশ্য অস্থায়ী উপাচার্য ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়কেও বেছে নিয়েছিলেন তিনি। আর ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেন তিনিই। ফলে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আর গৌতম মজুমদার পদত্যাগপত্রে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ বলে উল্লেখ করেছেন। অথচ রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। তবে ম্যাকাউটের ভিতরের খবর, গৌতম মজুমদারের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এটা তিনি বেশ বুঝতে পেরে ছিলেন।

আরও পড়ুন:‌ আবার পাতালপথে আগুন আতঙ্ক, দৌড়োদৌড়ি নিত্যযাত্রীদের, পরে পরিষেবা স্বাভাবিক

আর শিক্ষামন্ত্রী কেন চিনতে পারলেন না?‌ এই সব ঘটনার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন। কিন্তু সেখানে তিনি নয়া অস্থায়ী উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেননি। এমনকী নয়া উপাচার্যকেও দেখা যায়নি। রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী গেলে সংশ্লিষ্ট উপাচার্যকে তাঁর সঙ্গে দেখা যায়। তাঁরা একসঙ্গে কথা বলেন। এটাই রীতি। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে উপাচার্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁর জবাব, ‘কোন উপাচার্য? আমি চিনি না। কে?’