প্রয়াত বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। শুক্রবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বছর খানেক ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। হাসপাতাল থেকে বিজ্ঞানীর দেহ তাঁর মিন্টো পার্কের বাসভবনে আনা হয়।
১৯৪৫ সালে মুর্শিদাবাদের কান্দিতে জন্ম হয় বিকাশ সিংহের। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতকস্তরের পড়াশুনা করেন তিনি। পরে উচ্চতর পঠনপাঠনের জন্য ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ভারতের পরমাণু গবেষাণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। ভাবা অ্যাটোমিক সেন্টারের সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে গবেষণার ক্ষেত্রে অসমান্য কৃতীত্বের জন্য তিনি জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকেডেমির ফেলো নির্বাচিত হন।
পরমাণু গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্যেকে কাজে লাগাতে বিজ্ঞানীকে গুরু দায়িত্ব দেয় ভারত সরকার। ২০০৫ সালে তাঁকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত করা হয়। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার তাঁকে ওই পদে বেছে নেওয়া হয়।
২০১০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান বিকাশ সিংহ। তিনি ‘সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’-এর অধিকর্তা পদেরও দায়িত্ব সামলেছেন।
বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান সচেতনতা প্রসারের কাজও নিরবিচ্ছিন ভাবে করে গিয়েছেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সিলেবাস কমিটির উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করেন।
বিজ্ঞানীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি লিখেছেন, ‘মহান বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের অকাল প্রয়াণে আমি শোকহত। বাংলার এই কৃতী সন্তান, এই প্রতিভাবান পরমানু বিজ্ঞানী তাঁর শুধুমাত্র জ্ঞানের জগতেই নয়, চলমান জনজীবনেও তাঁর অবদানের মাধ্যমে আমাদের গর্বিত করেছেন। আমরা তাঁকে ২০২২ সালে আমাদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ‘বঙ্গবিভূষণ’ প্রদান করি। মঞ্চে তার ব্যক্তিগত উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। আমরা তাঁকে ২০২২ সালে ‘রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার’ দিতে পারেছি। আমি তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ছাত্র এবং অনুরাগীদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’