Bilkis Bano Case in Supreme Court: অপরাধীদের সমাজে ফেরার সাংবিধানিক অধিকার আছে, বিলকিস মামলায় পর্যবেক্ষণ SC-র

বিলকিস বানোর অপরাধীদের মুক্তির বিরোধিতা করে দায়ের মামলার প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। বিচারপতি বিভি নাগারত্না এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুইঁঞার বেঞ্চ জানায়, কোনও অপরাধীকে সমাজে ফিরে যাওয়ার অধিকার দেয় সংবিধান। শীর্ষ আদালত জানায়, সংবিধানের দ্বারা রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে যাতে করে তাঁরা অপরাধীদের সাজা মুকুব করতে পারেন। এদিকে ১১ অপরাধীকে মুক্তির বিষয়ে গতকাল শীর্ষ আদালতে গুজরাট সরকার জানায়, অপরাধীদের আগাম মুক্তির নেপথ্যে কোনও গোপন অভিসন্ধি ছিল না সরকারের। যদিও মামলাকারীদের দাবি, যে অপরাধ এই ১১ জন করেছে, তাতে ৩৪ বছরের আগে কোনও ভাবেই তাদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া যায় না।

মামলাকারীদের দাবি, সংবিধানের দ্বারা সাজা মুকুবের প্রক্রিয়ার বিধান থাকলেও তা আইন মেনে করা উচিত। প্রতিটি কেসের ঘটনাপ্রবাহ বিচার করে এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এতেই বিচারপতি নাগারত্না বলেন, ‘অপরাধীদের সমাজে ফিরে যাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সংবিধানের ১৬১ এবং ৭২ নং ধারাতে এর উল্লেখ রয়েছে।’ এর প্রেক্ষিতে ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান উইমেনের আইনজীবী নিজাম পাশা দাবি করেন, সংবিধান রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালকে সাজা মুকুবের ক্ষমতা প্রদান করেছে ঠিকই, তবে তা কোনও অধিকার নয়।

এর আগে বিলকিস বানোর অপরাধীদের আগাম মুক্তি নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, শীর্ষ আদালতে করা এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে অপরাধীদের আগাম মুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সেই রিট পিটিশনের আগে গুজরাট হাই কোর্টে অপরাধীদের আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছিল। এই আবহে নিয়ম মাফিক, সুপ্রিম কোর্টে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করা যেত। বদলে রিট পিটিশন করা হয়েছিল এবং তা গ্রহণ করেই শীর্ষ আদালতে মামলা চলে। এবং সেই মামলার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে পদক্ষেপ করে অপরাধীদের মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার।

এই আবহে বর্তমান বেঞ্চ প্রশ্ন করে, ‘হাই কোর্টের নির্দেশকে কি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে? তা যদি না হয়ে থাকে তাহলে সেই সময় শীর্ষ আদালত কোন এক্তিয়ারে হাই কোর্টের রায়কে সরিয়ে রেখেছিল?’ পাশাপাশি গুজরাট সরকারের আইনজীবীকেও সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে, সেই সময় শীর্ষ আদালতে এই মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কিনা। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কেন গুজরাট সরকার রিভিউ পিটিশন দাখিল করেনি, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি নাগারত্না। প্রসঙ্গত, বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের গত ১৫ অগস্ট মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক চরমে। সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য সুভাষিণী আলি, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং অন্য একজন আদালতে এই ১১ জনের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে বিলকিসও দাবি করেছিলেন, শীর্ষ আদালতের নিয়ম লঙ্ঘন করে ওই ১১ জন ধর্ষককে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাট সরকার।