পথ দুর্ঘটনায় নিহত জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ ফিরল কাকদ্বীপের বাড়িতে

পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল সেনা জওয়ান সুমিত মাইতির। আজ তাঁর কফিন বন্দি দেহ ফিরল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাড়িতে। জওয়ানের দেহ ঘরে ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয় পরিজনেরা। তাঁর দেহ পৌঁছতেই সেখানে ভিড় করেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। সেখানে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে তাঁকে শেষ বিদায় জানান জওয়ানেরা।  

আরও পড়ুন: দেড় মাস আগে বিয়ে, পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু রাজস্থানের সেনা জওয়ানের

কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল জওয়ানের?

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি থেকে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি গ্যাংটকে গিয়েছিল। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করেই ফিরছিলেন সুমিত। সেই সময় নাথুলা পাহাড়ের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি খাদে উলটে যায় সেনাবাহিনী ওই গাড়ি। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় গাড়ি চালক এবং ওই সেনা জওয়ানের। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন সেনা জওয়ান। তবে দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল গত মঙ্গলবার। মৃত্যুর পরে সেনা জওয়ান পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেনা অধিকারিকরা। এরপর আজ তাঁর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই সেনা জওয়ান দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ বিধানসভার রাজনগর এলাকার বাসিন্দা। 

আজ শুক্রবার প্রথমে তাঁর দেহ নামখানা নারায়ণ বিদ্যামন্দির স্কুলে আনা হয়। উল্লেখ্য, ওই স্কুলেই তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানে এলাকার মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। মৃতদেহ নিয়ে আসা অন্যান্য জওয়ানেরা জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে তাঁকে শেষ বিদায় জানান। সেখান থেকে সুমিতের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। শয়ে শয়ে মানুষ হেঁটেই রাজনগর গ্রামে যান। প্রতিবেশীদের দাবি, সুমিত মাইতি মারা যাননি। তিনি রাজনগর সহ এলাকার মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।

জয়দেব প্রধান নামে এক প্রতিবেশী জানান, ‘আমরা ছোট থেকে সুমিতকে স্নেহ করি। গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তাঁর মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। তবে সুমিত আমাদের কাছে অমর থাকবেন।’ প্রভাত সর্দার নামে অন্য এক প্রতিবেশী জানান, ‘সুমিত খুবই ভালো ছেলে ছিল। ও পাড়ায় যে কোনও অনুষ্ঠানে খুব আনন্দ করত। এমনকী পুজোতে অনেক টাকা দিয়ে সাহায্য করতো। আমার ছেলে, মেয়ে নাতি-নাতনিদের নিয়ে খুব আনন্দ করত। ও যে এভাবে চলে যাবে তা আমরা ভাবতেই পারছি না।’  স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে সুমিতের ছোট ভাইও একজন সেনা জওয়ান।