রাখি পূর্ণিমার আগেই ‘‌দিদি’‌র রাখির চাহিদা তুঙ্গে উঠল, রোজগার বাড়ল শিল্পীদের

‌প্রায়ই তাঁর মুখ শোনা যায়, সবাই একসঙ্গে থাকুন। বিভেদ–বিভাজনকে মনে প্রশ্রয় দেবেন না। অটুট সম্পর্ক গড়ে তুলুন। নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ করবেন না। ধর্ম যার যার উৎসব সবার—এই কথাগুলি বলে থাকেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পনেরো দিন পরই রাখীবন্ধন। এই উৎসবে মেতে উঠবেন রাজ্যবাসী। আর তাই এখন খাওয়াদাওয়া ভুলে গিয়ে রাখি তৈরির কাজ জোরকদমে শুরু করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরে মহিষাদলের গড়কমলপুরের শিল্পীরা। এখানে সব ধর্মের মানুষই বাস করেন। তাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি একতার বার্তা দেন। তাই শিল্পীরা জানাচ্ছেন এই বছর দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছবি দেওয়া রাখির চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে।

এদিকে মহিষাদলের গড়কমলপুরের মহিলারা রাখি তৈরি করেন। আর এভাবেই স্বনির্ভর হচ্ছেন তাঁরা। এখানে প্রায় ১৫০ জন মহিলা রাখি তৈরির কাজে যুক্ত। সারা বছর ধরেই তাঁরা রাখি তৈরি করেন। কিন্তু জুন, জুলাই এবং অগস্ট মাসে বাড়তি চাপ থাকে। কারণ এখান থেকে জেলার অন্য প্রান্তে যেমন রাখি যায় তেমন কলকাতাতেও আসে। তাছাড়া স্টল করে রাখি পূর্ণিমার এক সপ্তাহ আগে থেকেই রাখি বিক্রি হতে থাকে। এক টাকা থেকে একশো টাকা পর্যন্ত দামের রাখি পাওয়া যায় এখানে। করোনাভাইরাসে দুটো বছর রোজগার তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। তাই তাঁদের রোজগারের দিশা দেখিয়েছে এই রাখি শিল্প।

ঠিক কী বলছেন শিল্পী?‌ অন্যদিকে এই রাখি এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বন্ধনে আবদ্ধ করতে এই রাখি বরাবরই সংস্কৃতির মধ্যে ছিল। এখন সেটার মাত্রা তুঙ্গে উঠেছে। কারণ মানুষ যেভাবে নিজেদের স্বজনকে হারাচ্ছেন নানা কারণে সেখানে রাখি পরিয়ে অটুট বন্ধন তৈরি করতে দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়ে গড়কমলপুরের রাখি শিল্পীদের প্রধান ময়না মণ্ডল সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌১২–১৪ বছর ধরে রাখি তৈরি করছি। বাচ্চদের কার্টুনের ছবি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা–নেত্রীদের ছবি দেওয়া রাখি তৈরি করি। তবে এবার দিদির রাখির চাহিদা বেড়েছে। দিদির রাখি সবসময়ই চলে। এই বছর অর্ডারটা আরও বেশি হয়েছে।’‌

আরও পড়ুন:‌ ধূপগুড়িতে দাঁড়িয়ে গেল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস‌, দীর্ঘক্ষণ থমকে থাকার কারণ কী?

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সাফল্যের পর রাখি পূর্ণিমা পড়েছে। তাই মানুষজন এটা বেশি কিনছে। ময়না মণ্ডলের কথায়, ‘‌এই রাখি তৈরির কাজের সঙ্গে ১৫০ মহিলা যুক্ত। যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করত এখন তাঁরা এই কাজ করছে। করত।’‌ ঝুমা মণ্ডল বলেন, ‘‌ঘরের কাজের পর রাখি তৈরি করি। দু’‌পয়সা বাড়তি রোজগার হয়। প্রচুর পরিশ্রমের পর টাকা পেলে খুব আনন্দ হয়। এই কাজ করতে ভালও লাগে।’‌