যোনিতে আঘাত বা বীর্যের নমুনা না মিললেও ধর্ষণের প্রমাণ করা যায়: হাইকোর্ট

ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। ‘যোনিতে আঘাত বা বীর্যের নমুনা না থাকলেও ধর্ষণ হয়েছে, তা প্রমাণ করা যায়।’ এমনই পর্যবেক্ষণ জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ধর্ষেণের পর নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষার সময় তাঁর যোনিতে কোনও আঘাত কিংবা ধর্ষকের বীর্যের নমুনা না থাকলেও অপরাধ প্রমাণিত হতে পারে। আর সেই দায় বর্তায় আদালতের ওপর।

আরও পড়ুন: যোনিতে বীর্যের নমুনা না পেলে সেটা কি ধর্ষণ বলা যাবে? বড় রায় দিল আদালত

বিচারপতি সঞ্জয় ধর এবং বিচারপতি রাজেশ সেখরির ডিভিশন বেঞ্চ এবিষয়ে আইন তুলে ধরে ব্যাখ্যা করে। আদালতের মতে, ধর্ষণের শিকার হওয়া নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একজন চিকিৎসক শুধুমাত্র সম্প্রতি যৌন কার্যকলাপের বিষয়ে প্রমাণ করতে পারেন। তবে, ধর্ষণ হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করা আদালতের এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে যায়। হাইকোর্ট মেডিক্যাল পরীক্ষা এবং বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্তের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যের উপর জোর দিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়, ‘চিকিৎসক ধর্ষণের বিষয়টি নির্ধারণ করতে পারেন না। শুধুমাত্র সাম্প্রতিক যৌন ক্রিয়াকলাপের বিষয়টি বলতে পারেন। ধর্ষণ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না সেটা তাঁদের কাজ নয়। সে বিষয়ে বিচারবিভাগ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’ আদালতের বক্তব্য, গোপনাঙ্গে কোনও আঘাত না থাকলে বা বীর্যের নমুনা না পাওয়া গেলেও ধর্ষণের অপরাধ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।’

প্রসঙ্গত, নাতনিকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল বোধ রাজ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে নিম্ন আদালত। তাকে চ্যালেঞ্জ উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই ব্যক্তি। ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশুটির গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে, ডাক্তারের মতামত যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে শিশুটি। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, যে নির্যাতিতার যোনিতে বীর্যের নমুনা পাওয়া যায়নি। সেই সংক্রান্ত মামলার ভিত্তিতে এই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। নিম্ন আদালত ওই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ বহাল রাখে উচ্চ আদালত।  

সংক্ষেপে, এই রায়টি ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে চিকিৎসা মূল্যায়ন এবং আইনি ব্যাখ্যা উভয়ই জড়িত। আদালতের রায় অনুযায়ী ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ না মিললেও নির্যাতিতা ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধু আদালতের রয়েছে।