বৃষ্টির ঘাটতিতে ব্যাহত ধানচাষ, বিকল্প ফসলে সমাধান খুঁজছে রাজ্য

রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতিতে ধাক্কা খেয়েছে ধান চাষ। অগস্টে ভাল বৃষ্টি হলেও ধানের বীজতলা তৈরির সময় সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। ফলে পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া বীরভূমের একাংশে খরিফ চাষ সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার ধানের বিমা করানোর সময়সী আরও বাড়াল। ৩১ অগস্ট পর্যন্ত বিমা করানোর সময় ছিল। তা বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি ছিল ২৬ শতাংশ। যা কিনা মোট রাজ্যে ১২ শতাংশ। আবার জেলা হিসাবে বৃষ্টির ঘাটতির পরিমাণ মুর্শিদাবাদে ৪৫ শতাংশ, নদিয়ায় ৩২ শতাংশ, পুরুলিয়ায়২৯ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ২৪ শতাংশ, বীরভূমে ৩৫ শতাংশ, বর্ধমানে ১৮ শতাংশ এবং মালদায় ১৭ শতাংশ। গত বছরও এই জেলাগুলিতে ধান হয়েছিল ২ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার আর খরিফ মরসুমে সেভাবে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না।

কারণ হিসাবে কৃষি দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন, প্রথমদিকে চাষ করতে না ফলে তাঁর আর নতুন করে চাষ করতে চাইছেন না। তাছাড়া শেষের দিকে চাষ শুরু করলে ভাল ফসলও হয় না। সে কারণে অগস্টের শেষের দিকে কিছুটা বৃষ্টি হলেও চাষিরা অনীহা দেখাচ্ছেন চাষ করতে।

(পড়তে পারেন। মাত্র সাতটা সবুজ বাজির কারখানা, মজুতে বিধিনিষেধ, ফাঁপরে ব্যবসায়ীরা)

সম্প্রতি ধান চাষের ঘাটতি নিয়ে নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ে বৈঠক হয়। এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন সাত জেলার কৃষি আধিকারিকরা। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বৃষ্টির ঘাটতিতে যে সব জায়গায় চাষ হয়নি, সেখানে বিকল্প চাষের ব্যবস্থা করা হবে। এই বিকল্প চাষ হিসাবে, ডাল, সরষেও তিলের চাষ করা হবে। নবান্ন সূত্রে খবর ২ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বিকল্প চাষের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই ধরণের চাষের জন্য খুব কম জল লাগে। তাই বিনিয়োগে ভাল আয় হতে পারে এই সব ফসলে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হবে।

নবান্ন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত জমি চিহ্নিত করতে জিপিএস প্রযুক্তি কাজে লাগানো হবে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই জমির ম্যাপ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মধ্যে এই ম্যাপ তৈরির কাজ শেষ হবে। তার পর দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ।