তবে কি দুষ্কৃতীদের ডেরা হয়ে উঠেছে TMC? বাঁকুড়া শ্যুটআউটে প্রশ্ন উঠছে দলের ভিতরে

দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়ে উঠেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের দীর্ঘদিনের এই অভিযোগ যে অমূলক নয় তা টের পাওয়া গিয়েছে মঙ্গলবার বাঁকুড়া শ্যুটআউটে। ওই ঘটনার পর থেকে সময় যত কেটেছে ততই স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ। দলের ভিতরে ২ দল দুষ্কৃতীর বিবাদের জেরেই যে এই ঘটনা তা স্বীকার করে নিয়েছেন আহত এক তৃণমূল নেতার পঞ্চায়েত সদস্য স্ত্রী। গোটা ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।

এমনিতেই বাঁকুড়া তৃণমূলের কঠিন ঠাঁই। তার ওপর সেখানে জেল থেকে ফেরার পথে তৃণমূল নেতাদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ বাঁকুড়া – দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের কেশিয়াকোল এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় শ্যুটআউট হয়। জেল ফেরত তৃণমূল নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে অন্তত ৬ রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। আহত হয়েছেন অন্তত ৩ জন। কিন্তু যাঁকে জেল থেকে আনতে গিয়েছিলেন সেই তৃণমূল নেতা সাদ্দাম হোসেন ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ। ঘটনার পর থেকে এলাকায় যেমন আতঙ্ক ছড়িয়েছে তেমন মুখ লুকানোর জায়গা পাচ্ছে না তৃণমূল।

বুধবার সকালে এলাকায় একটি বন্দুক ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিন দেখতে পান স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে তাঁরা খবর দেন। পুলিশ এসে সেগুলি উদ্ধার করে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে গুলি চালাল কারা। ঘটনার পর বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও ধরা তো পরের কথা এখনো আততায়ীদের কাউকে চিহ্নিতই করতে পারেনি পুলিশ। নিখোঁজ জেল ফেরত তৃণমূল নেতা সাদ্দাম হোসেনও।

জানা গিয়েছে, কাটোয়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর জঙ্গল শেখের ছেলে সাদ্দাম। তাঁর বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র মজুতের অন্তত তিন ডজন মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বাঁকুড়া সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। তাঁকে আনতে সংশোধনাগারে গিয়েছিলেন গলসি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য নৈমিতা শেখের স্বামী জিয়াবুল হক শেখ, আইএনটিটিইউসি-র পূর্ব বর্ধমান জেলার সাধারণ সম্পাদক নুর মহম্মদ শাহ। গুলিতে তাঁরা ২ জনই আহত হয়েছে। সঙ্গে আহত হয়েছেন বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বাসিন্দা গোবিন্দ মণ্ডল।

স্বামীকে দেখতে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে এসে নৈমিতা শেখ দাবি করেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই এই ঘটনা। কারা এই কাজ করেছে জানি না। সাদ্দামকেও চিনি না। ওর সঙ্গে কারও শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

এই ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ কোনও তৃণমূল নেতা। তবে ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি যে নষ্ট হয়েছে তা স্পষ্ট। তৃণমূল সূত্রে খবর এই ঘটনায় প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।