ধর্ষণের পর ইট বেঁধে লাশ পুকুরে ফেলে দেয় ৩ বন্ধু, এক বছরেও জানা যায়নি নারীর পরিচয়

গাজীপুরের শ্রীপুরে ইয়াবা সেবনের আসরে এক নারীকে ডেকে এনে ধর্ষণের পর হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে তিন বন্ধু। একপর্যায়ে কোমরে ইট বেঁধে লাশ পুকুরে ফেলে দেয় তারা। ঘটনার এক বছর এক মাস পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করে তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে এখনও পরিচয় জানা যায়নি ওই নারীর।

পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে তিন বন্ধু জানিয়েছে, সেদিন ইয়াবার আসরে শারীরিক সম্পর্কের পর টাকা চাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে ওই নারীকে হত্যা করেছে তারা। বৃহস্পতিবার গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, শ্রীপুর উপজেলার টেপিরবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মোখলেসুর রহমান (৩১), একই গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে খোকন মিয়া (২৭) এবং মাসুদ রানার ছেলে রাজীব মোড়ল (২৬)।

মাকছুদের রহমান বলেন, গত বছরের ২৫ জুলাই শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার পুকুর থেকে হাত-পা বাঁধা ও কোমরে ইট বাঁধা অবস্থায় এক নারীর (৩০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি পচে যাওয়ায় আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানার এসআই সজীব হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দুই মাসের বেশি সময় মামলা তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়।

পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম তদন্ত করে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করেন। এর মধ্যে মোখলেসুর ও খোকনকে গত মঙ্গলবার ভোরে ও রাজীবকে বুধবার রাতে টেপিরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। ওই নারীকে হত্যার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারা।  উন্মোচন হয়েছে হত্যার রহস্য।

গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গাজীপুর পিবিআইয়ের এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনার কয়েকদিন আগে তিন বন্ধু মিলে ইয়াবা সেবনের আসর বসায়। সেখানে ওই নারীকে ডেকে এনেছিল। রাত ১০টার দিকে টেপিরবাড়ি গ্রামের নির্জন স্থানে ওই নারীকে নিয়ে ইয়াবা সেবন করেছিল। সেখানে মাঝেমধ্যে আসর বসাতো তারা। সেদিন মাদকগ্রহণের পর ওই নারীকে ধর্ষণ করে তিন বন্ধু। পরে টাকা চাওয়ায় ওই নারীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পরনের কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে। তবে ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি তারা। মোবাইলে ডেকে এনেছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।