কোথায় আছেন পুতিনের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নাভালনি

রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সি নাভালনিকে আরও ১৯ বছর থাকতে হবে জেলে। মস্কোর এক আদালত মঙ্গলবার এই সাজার বিরুদ্ধে তার করা আপিল খারিজ করে দেন। সবশেষ সাজা পেয়েছেন চরমপন্থি কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পর্কিত ছয়টি অভিযোগের দায়ে।

প্যারোলের শর্ত লঙ্ঘন, প্রতারণা ও আদালত অবমাননার দায়ে ১১ বছরের বেশি সময় ধরে সাজা ভোগ করছেন ৪৭ বছরের এই পুতিন সমালোচক। মস্কো থেকে প্রায় আড়াই’শ কিলোমিটার দূরে মেলেখোভো এলাকার একটি দুর্গম কারাগারে বন্দি আছেন ২০২১ সাল থেকে। তার আগে প্যারোলে মুক্ত ছিলেন তিনি।

মেলেখোভোয় একটি অস্থায়ী আদালত বসিয়ে ৪ আগস্ট নাভালনিকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও নাভালনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। পরে তার আইনজীবী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে মঙ্গলবার মস্কোর বিচারক তা খারিজ করে দেন।

মঙ্গলবারের আপিল শুনানিতে জেল থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে নাভালনি অংশ নেন। রুদ্ধদ্বার বিচারকক্ষে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। নাভালনি এবং তার আইনজীবীদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও রায় পড়ে শোনান বিচারক। এ সময় কয়েদির পোশাক পরা নাভালনি দাঁড়িয়ে বিচারকের সিদ্ধান্ত শুনছিলেন নীরবে।

 

 

রুশ প্রযুক্তিবিদ ড্যানিয়েল খোলোডনি এই মামলায় নাভালনির পাশাপাশি দণ্ডিত হয়েছেন। আগস্টে তাকেও ৮ বছরের জেল দেওয়া হয়। মঙ্গলবার খোলোডনির আপিলও খারিজ হয়ে যায়।

রাশিয়ার সরকার বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তিত্ব নাভালনি। সমর্থকরা তার ব্যক্তিত্বকে কিংবদন্তী নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনা করেন। তাদের প্রত্যাশা একদিন জেল থেকে মুক্তি পাবেন নাভালনি।

রাশিয়া গত বছর ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর থেকেই নাভালনির রাজনৈতিক আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করে পুতিন সরকার। তার দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ঢোকানো হয়েছে জেলে। জীবন বাঁচতে অনেকে ছেড়েছেন দেশ। 

প্যারোলে মুক্ত নাভালনি চিকিৎসা নিতে জার্মানি গিয়েছিলেন। ২০২১ সালে সেখান থেকে রাশিয়ায় ফেরার পথে নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় তাকে। সেবার অল্পের জন্য বেঁচে যান নাভালনি। তবে রাশিয়ার মাটিতে নেমেই তিনি গ্রেফতার হন। সেই থেকে জেলেই আছেন নাভালনি। এর আগে মস্কোয় বন্দুক হামলার শিকার হয়েছিলেন পুতিনের এই ঘোর সমালোচক।

ক্রেমলিন অবশ্য তাকে হত্যার বিষয়টি জোর গলায় অস্বীকার করে আসছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, কেউ যদি তাকে সরিয়ে দিতে চাইতো, তবে তাকে হত্যাই করতো। বাঁচিয়ে রাখতো না।  

সূত্র: আল জাজিরা