অসংখ্য যাত্রীর প্রাণ বাঁচানো খুদেকে ₹১৫০০পুরস্কার! হাসির খোরাক রেল, জবাবে যা বলল

নিজের লাল গেঞ্জি উড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে থামিয়ে দিয়েছিল সাহসী বালক মহম্মদ মুরসেলিম। তার উপস্থিত বুদ্ধিতে বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছিল। এমনই সাহসী বালককে মাত্র ১৫০০টাকা পুরস্কার দিয়ে কুর্নিশ জানাল রেল। 

রেলের এই পুরস্কারের অঙ্ক দেখে অনেকেই হাসছে। কেউ কেউ বলছেন, কারণ-আকারণে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রেল।  আর যেখানে নিজের জীবন ঝুঁকিতে রেখে হাজার হাজার যাত্রীর প্রাণ বাঁচাল সেখানে তাঁর পুরস্কার মাত্র ১৫০০ টাকা। 

(পড়তে পারেন। বিশাল চেহারার গজরাজের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঝাড়খণ্ড সীমানায়‌, কেমন করে ঘটল?‌)

রেলের আধিকারিকরা অবশ্য বলছেন, ট্রাকের নীচে তাঁরা ওই গর্তটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। সে কারণে ওই এলাকায় ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। অন্য সময় ট্রেনগুলি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ওই জায়গা অতিক্রম করত। কিন্তু ট্রাকের নীচে গর্ত থাকায় মাত্র ২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেনগুলিকে যেতে বলা হয়। 

উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের কাটিহার বিভাগের একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেন, ‘টাকার অঙ্কটি অমূলক। আমরা তাকে তার কাজের জন্য টাকা দিইনি। আমরা ছেলেটির দায়িত্ব বোধ এবং সেবার মানসিকতাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। ছোট ছেলেটির নিরাপত্তা বোধকে আমরা প্রশংসা করেছি। তাকে একটা শংসাপত্রও দিয়েছি।’

নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা মুরসেলিমদের। বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। গুজরাটে কর্মরত। মা বিড়ি বেধে সংসার চালান। মাথার উপর পাকা ছাদ নেই। তের বছরের মুরসেলিম সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার ভাই ৭ বছর বয়সি ইমরান পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।  

পুরস্কারের অঙ্ক নিয়ে মা মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনা রুখল। অনেকের প্রাণ রক্ষা পেল। রেল যা টাকা দিয়েছে তা খুবই নগন্য। ওই টাকায় আজকাল কী হয়। ’

রেলের পুরস্কারের অঙ্ক দেখে হতাশ আত্মীয়-স্বজনরা। তাঁদের ভেবেছিলেন রেলের পুরস্কারের অঙ্কে কপাল ফিরবে মুরসেলিমদের। কিন্তু তারা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেল। 

জেলা পরিষদের এক সদস্য জানিয়েছেন, বালকের মাধ্যমিক পরীক্ষার সব খরচ তাঁরা নেবেন। রেল পুরস্কার দেওয়ার পর মুরসেলিমদের বাড়িতে যান সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন তার জন্য কিছু করার।