মন্ত্রী–মেয়র দুটি পদে ফিরহাদ কেমন করে?‌ প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারকে চিঠি রাজ্যপালের

এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নিশানায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাই এবার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। নবান্ন–রাজভবন সংঘাত কি আরও চওড়া হচ্ছে? এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারকে একটি চিঠি লিখেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে রাজ্যপালের প্রশ্ন ফিরহাদ হাকিমের পদ নিয়ে। ফিরহাদ হাকিম রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়রও। এই দুই পদে এক ব্যক্তির থাকা নিয়েই রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলেছেন। জানতে চেয়েছেন, কী করে ফিরহাদ হাকিম একই সঙ্গে মন্ত্রী–মেয়র? ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করার পর এই চিঠি বেস তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানতে চান, এটা কি ‘অফিস অব প্রফিটের’ মধ্যে পড়ছে? যদিও এই নিয়ে জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিমও। ‘‌একইসঙ্গে মন্ত্রী, আবার কলকাতার মেয়র কীভাবে?‌’‌ এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট চিঠিতে। তবে তখন তিনি রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। শোভন চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দেওয়ার পর কলকাতার পুরসভার মেয়র হন ফিরহাদ হাকিম ২০১৮ সালে। পুর আইন অনুযায়ী, মেয়র হতে গেলে কলকাতা পুরসভার কোনও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়া বাধ্যতামূলক। সেই আইন সংশোধন করে রাজ্য সরকার। পরে অবশ্য ভোটে জিতে কাউন্সিলর হন ফিরহাদ হাকিম। সুতরাং মেয়র হতে তাঁর কোনও আইনি জটিলতা থাকে না। আবার নির্বাচিত বিধায়ক হওয়ায় তিনি মন্ত্রীও।

অন্যদিকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানতে চান, একজন ব্যক্তি কীভাবে এরকম গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পদ সামলাচ্ছেন? তাঁর প্রশ্ন, এখানে কি অফিস অফ প্রফিট অর্থাৎ লাভজনক পদের কোনও বিষয় আছে কি না। ২০২১ সালের নির্বাচনে কলকাতা পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ট পায় তৃণমূল কংগ্রেসই। ১৩৪টি ওয়ার্ডে জেতেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। জেতেন ফিরহাদ হাকিমও। পাঁচ বছরের জন্য মেয়র হন ফিরহাদ হাকিম। মহারাষ্ট্র নিবাস থেকে কলকাতার মেয়র পদে তাঁর নাম ঘোষণা করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরহাদ আবার মন্ত্রীও।

আরও পড়ুন:‌ টেস্ট পরীক্ষায় ‘বিতর্কিত’ প্রশ্ন করা যাবে না, নির্দেশিকা জারি করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

ঠিক কী বলছেন ফিরহাদ এবং তৃণমূল?‌ এই বিষয়ে মন্ত্রী–মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন সংবাদমাধ্যমে, ‘‌এখনই রাজ্যপালের চিঠি নিয়ে কিছু বলছি না। এখন আমি দিল্লিতে। তবে কলকাতায় ফিরে সাংবাদিক বৈঠক করে সবটা জানাব। তাছাড়া কীভাবে আমি মেয়র এবং মন্ত্রী সেটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানলেই হবে।’‌ পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‌রাজ্যপাল কোনও নিয়মের ধার ধারে না। শুধু রাজ্য সরকারের কাজকর্মে নাক গলাচ্ছেন। ওনার অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এমন বহু লোক এভাবে দুটি পদ সামলেছে। যদি রাজনীতি করতে হয়, তাহলে রাজভবন থেকে বেরিয়ে বিজেপির অফিস থেকে যেন নির্বাচনে লড়ুন। কার বিরুদ্ধে লড়তে চান, বলে দিন। যেখানে বলবেন, সেখানে। লক্ষ ভোটে হারাব আমরা এই রাজ্যপালকে। রাজভবনে বসে বড় বড় কথা বলা বন্ধ করা উচিত।’‌