Explained Allegations against Kejriwal and Mahua: ‘দু’জনেই দু’নম্বরি’, মহুয়া-কেজরিকে তোপ BJP-র, অভিযোগগুলি কী কী?

আজ সকাল ১১টার সময় আবগারি কেলেঙ্কারি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে তলব করেছে ইডি। এদিকে আজকে সংসদের এথিক্স কমিটির সামনে ‘ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন’ মামলায় হাজিরা দেবেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। দু’জনই পৃথক পৃথক মামলায় আলাদা আলাদা জায়গায় দেবেন হাজিরা। তবে দিল্লি এবং গোটা দেশের নজর এই দুই রাজনৈতিক নেতার দিকে। এদিকে গতরাতে এই দুই নেতাকেই ‘দু’নম্বরি’ বলে তোপ দাগেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনিই মহুয়ার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন।

কেন তলব করা হয়েছে কেজরিওয়ালকে? কী এই আবগারি দুর্নীতি মামলা? দিল্লির এই আবগারি দুর্নীতি মামলায় প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই-এর তরফে এর আগেই আদালতে দাবি করা হয়েছে, দিল্লি সরকারের শীর্ষ কর্তারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তদন্তকারীদের দাবি, আপ সরকারের আমলে দিল্লির আবগারি নীতি এমনভাবে করা হয় যাতে কিছু ব্যবসায়ী সুবিধা পান। ঘুষের বদলে ওই সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয় কিছু মদ ব্যবসায়ীকে। এদিকে সোমবার এই মামলায় ধৃত মণীশ সিসোদিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ হয় সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে কেজরিওয়ালকে তলবের বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

এদিকে হাজিরার সময়ের কিছু আগে ইডিকে তোপ দেগে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘ইডির সমন নোটিশ অবৈধ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিজেপির নির্দেশেই এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। চারটি রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে যেতে না পারার বিষয়টি নিশ্চিত করতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ইডি অবিলম্বে নোটিশটা প্রত্যাহার করুক।’ এর আগে গত ১৬ এপ্রিল আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালকে প্রায় সাড়ে ন’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই।

এদিকে একদিকে যেখানে আজ ইডির তলবে হাজিরা দেওয়ার কথা কেজরির, সেখানে সংসদীয় এথিক্স কমিটির সামনে হাজির হবেন মহুয়া মৈত্র। মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী? ব্যবসায়ী হিরানন্দানিকে যে নিজের সাংসদ পোর্টালের লগইন আইডি দিয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া এবং জাতীয় সুরক্ষাকে লঘু কার অভিযোগ। এর আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে মহুয়া মৈত্র স্বীকার করেন, হিরনন্দানির কাছে তাঁর সাংসদ লগইন রয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দেন।

উল্লেখ্য, এর আগে সিবিআই-এর কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন’ করার মামলায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহদরাই এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এদিকে এই বিতর্ক নিয়ে হলফনামা দিয়েছেন শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানি। তাতে আরও চাপে পড়েছেন মহুয়া মৈত্র। হলফনামায় হিরানন্দানি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম করতে আদানি গ্রুপকে নিশানা করেছিলেন মহুয়া। আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য নাকি হিরানন্দানিকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামা অনুযায়ী, দর্শন হিরানন্দানির দাবি, আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। পরিবর্তে তাঁর থেকে মহুয়া বিলাসবহুল জিনিসপত্র নিতেন। হিরানন্দানি দাবি করেছেন, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করার পথ বেছে নেন মহুয়া। কিন্তু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে নীতি সংক্রান্ত বিষয়, প্রশাসনিক বিষয়ে মোদীকে আক্রমণের সুযোগ পাননি মহুয়া। সেজন্য আদানি গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহুয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণের পন্থা বেছে নেন।

হিরানন্দানি দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মহুয়ার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁর। সেইসময় বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। ২০১৯ সালে সাংসদ হন মহুয়া। সেই সময় ব্যবসায়িক ‘দ্বন্দ্ব’ চলছিল আদানি এবং হিরানন্দনিদের মধ্যে। দর্শনের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি না করে আদানি গোষ্ঠীর ধর্মা এলএনজির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। এই আবহে আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্নমালা তৈরি কে দেওয়ার জন্য দর্শনকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহুয়া। এর জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামায় দাবি কর হয়, ক্রমেই মহুয়ার সঙ্গে হিরানন্দনির সম্পর্ক ভালো হতে থাকে। পরে তাঁর থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করতে থাকেন মহুয়া। তাঁর ওপর নাকি মহুয়া চাপও সৃষ্টি করেছিলেন। এই আবহে মহুয়ার কথা মতো চলতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হওয়ায় তিনি নিজে থেকেই মুখ খুলেছেন বলে দাবি করেছেন হিরানন্দানি।