অ্যাক্টিভ দশ মিনিটে সোনার দোকানে ডাকাতি করতে পারা গ্যাং, সতর্ক কলকাতা পুলিশ

সম্প্রতি রানাঘাট, পুরুলিয়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সোনার দোকানে বড় বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সে ক্ষেত্রে বিহারের ডাকাতদলের যোগ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত বিহারের দুষ্কৃতী দল কলকাতায় হানা দেয়নি। তবে উৎসবের সময় অর্থাৎ ধনতেরাস, কালীপুজোর সময় যাতে বিহারের দুষ্কৃতী দল কলকাতায় হানা দিতে না পারে, তার জন্য নজরদারি চালাচ্ছে লালবাজার। এছাড়া, এই উৎসবের সময় অনেক সোনার দোকান মধ্যরাত্রি পর্যন্ত খোলা থাকে। সেক্ষেত্রে দোকানগুলিকে সতর্ক করছে লালবাজার। 

আরও পড়ুন: সোনারপুরের সোনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতি, চলল গুলি, ব্যাপক লুঠপাট

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রাজ্যের বিভিন্ন সোনার দোকানে দুষ্কৃতী হানার তথ্য সংগ্রহ করেছে লালবাজার। তাতে কলকাতা পুলিশ জানতে পেরেছে, এ সমস্ত দুষ্কৃতীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বিহারের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায়। প্রত্যেকটি দলে ৭–৮জন করে সদস্য রাখা হত। তবে তারা একে অপরের আসল পরিচয় জানত না। নিজেদের মধ্যে কোড নামে তারা একে অপরকে ডাকত বলে জানা গিয়েছে। কীভাবে সোনার দোকানে ডাকাতি করা হবে? সে বিষয়েও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তাদের শেখানো হত, প্রথমে সোনার দোকানের আশেপাশে কয়েকবার ঘুরে দেখতে হবে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। এছাড়া, তাদের বিহারে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। সেক্ষেত্রে কীভাবে দোকানে লুটপাট চালাতে হবে? সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এই সমস্ত দুষ্কৃতী দলদের ১০ মিনিটের মধ্যে লুটপাটের কাজ শেষ করতে বলা হত। অর্থাৎ ১০ মিনিটের মধ্যে সোনার দোকানে ঢুকে বন্দুক দিয়ে ভয় দেখানো থেকে শুরু করে সিসিটিভি বিকল করা এবং গহনা নিয়ে বেরিয়ে আসা এই সমস্ত প্রক্রিয়া ১০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বলে ডাকাত দলের সদস্যদের শেখানো হত। এরপর লুট করা সোনার গহনা নিয়ে যাতে পালাতে সুবিধা হয় তার জন্য পুরনো বাইক কেনা হত। সে ক্ষেত্রে দুষ্কৃতী দল যাতে এলাকায় বাইক ফেলে গাড়ি ধরে অনায়াসে পালিয়ে যেতে পারে তার জন্য পুরনো বাইক কেনা হত বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। 

শুধু তাই নয়, পালানোর সময় যদি অল্প কিছু গহনা পড়ে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে অযথা তোলার জন্য যেন সময় নষ্ট না করা হয় সেই বিষয়টিও প্রশিক্ষণ দেওয়া হত দুষ্কৃতী দলদের। এমনকী কোনও বাধার সম্মুখীন হলে গুলি চালাতে বলা হত। কলকাতাতে ৩৩ কালীপুজোর মণ্ডপে প্রতিমা সোনা, রুপোর গহনা দিয়ে সাজানো হবে। তার ওপর ধনতেরাস। সেই কারণে সতর্ক লালবাজারের গোয়েন্দারা।