‘‌এন্ট্রোপিয়ান আইলিড’‌ সমস্যায় ভুগছিল স্নো লেপার্ড, সফল অস্ত্রোপচার শৈলশহরে

‘‌এন্ট্রোপিয়ান আইলিড’‌ একটা চোখের অসুখ। এই অসুখ মানুষ থেকে পশু সকলেরই হতে পারে। এই অসুখটি আসলে এককথায় বলতে গেলে, চোখের পাতা চোখের ভিতরে থাকে। আর তার জেরে স্বাভাবিক তাকানো ঘটে না। চোখ থেকে শুধু জল বের হয় এই অসুখটি হলে। তবে এটি হঠাৎ করে হয় না। এটি জন্মগত সমস্যা প্রাণীর। তাই এই অসুখ নিয়ে জন্মালে তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচার করতে হয়। সেটা না করলে অন্ধ পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই প্রথম তুষার চিতা বা স্নো লেপার্ডের শাবকের এন্ট্রোপিয়ান আইলিড অস্ত্রোপচার করা হল। দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় চার মাসের স্নো লেপার্ডের চোখের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এটা দেশের মধ্যে প্রথম, কোনও স্নো লেপার্ডের এমন অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ স্নো লেপার্ড বিরল প্রজাতির প্রাণী। আর তারা বরফ আবৃত জায়গায় থাকে। এখানে লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম এবং দার্জিলিংয়ে মেলে স্নো লেপার্ড বা তুষার চিতা। আর বন দফতর দার্জিলিংয়ের তোপকেডারে স্নো লেপার্ডের সংরক্ষণের কাজ করে। এখন সেখানে ১৫টির মতো স্নো লেপার্ড আছে। তোপকেডারে প্রজনন কেন্দ্রে একটি স্নো লেপার্ড দুটি শাবকের জন্ম দেয়। কিন্তু জন্মের পর থেকে ওই শাবকের চোখের সমস‌্যা ধরা পড়ে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য সদ্যজাত শাবককে ছাড়তে চাইছিল না মা শাবক। আর তার জেরে বন দফতরের অফিসাররা বেশ চাপে পড়ে যান। বন দফতরের আধিকারিকরা বুঝতে পেরেছিলেন শাবকের চোখে সমস‌্যা রয়েছে। কিন্তু বুঝেও উপায় হচ্ছিল না।

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ বন দফতরের অফিসাররা এবং কয়েকজন বিশেষজ্ঞ নাগাড়ে ওয়াচ করে বুঝতে পারলেন অসুখ চোখে এটা ঠিক। আর যে অসুখটি হয়েছে সেটাকে বলে এন্ট্রোপিয়ান আইলিড। মেয়ে শাবক বৈশাখী এখন এই সমস্যায় ভুগছে। তখন শুরুতে অস্ত্রোপচার ছাড়াই চিকিৎসা করা হয়। তাতে সাফল্য আসছিল না। বরং চোখের কষ্ট বাড়ছিল। পরিস্থিতি জটিল বুঝতে পেরে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই অস্ত্রোপচার নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। অস্ত্রোপচার না করলে শাবকটি সারাজীবনের মতো অন্ধ হয়ে যাবে। এমন সম্ভাবনাও দেখা দেয়।

আরও পড়ুন:‌ আর বীরভূমের জেলা সভাপতি নন অনুব্রত মণ্ডল, নতুন কে দায়িত্ব নিল সেখানে?‌

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ নানা দিক চিন্তা করে দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক‌্যাল পার্কের হাসপাতালে চোখের অস্ত্রোপচার করা হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, এন্ট্রোপিয়ান আইলিড কোনও বিরল অসুখ নয়। অস্ত্রোপচার সঠিক সময় হলেই চোখ ঠিক হয়ে যায়। আর সেটাই ঘটল। অস্ত্রোপচারের পর বৈশাখী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। চিকিৎসক উৎপল দাস বলেন, ‘‌প্রাণীদের মধ্যে এন্ট্রোপিয়ান আইলিড কুকুর, বিড়ালের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। এটা জন্মগত সমস্যা। চোখের পাতা ভিতরে থাকায় চোখ জ্বালা করে এবং জল পড়তে থাকে। অস্ত্রোপচারই একমাত্র পথ।