ট্রান্সজেন্ডার নারী হো চি মিন ইস্যুতে মহিলা পরিষদের নিন্দা  

ট্রান্সজেন্ডার নারী হো চি মিন ইসলামের সম্প্রতি একটি সেমিনারে যোগদানকে কেন্দ্র করে আলোচনায় আসে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদের মুখে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পসে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তার তালিকা থেকে হো চি মিন ইসলামকে বাদ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।                              

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানলাম, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিরোজ ফর অল এবং আই সোশ্যাল আয়োজিত উইমেন্স ক্যারিয়ার কার্নিভ্যালে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় অধিকারকর্মী হো চি মিন ইসলামকে। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ন্যায্যতার ভিত্তিতে কীভাবে কর্মসংস্থানে অর্ন্তভুক্ত করা যায় এবং কীরকম পরিবেশ সৃষ্টি করলে তাদের কাজের জন্য অর্ন্তভুক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত হয়, সে বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল হো চি মিনের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ হো চি মিন ইসলামের উপস্থিতি প্রতিহত করার জন্য আন্দোলন শুরু করে এবং পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দেয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে নিরাপত্তার অজুহাতে বক্তার নামের তালিকা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে তার গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।

মহিলা পরিষদ জানায়, জাতিসংঘের এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ, যেখানে বলা হচ্ছে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। সেখানে হো চি মিনের ওই কার্নিভ্যালে বক্তব্য রাখার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অগ্রহণযোগ্য এবং মানবাধিকারের পরিপন্থি। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের আচরণ অনভিপ্রেত, যার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এড়াতে পারে না।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ পরিচয়ে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করবে। শিক্ষার্থীদের এ ধরণের মানস গঠনেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সব ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীর মানুষের সহবস্থান নিশ্চিত করাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিতে সবার প্রতি আহ্বান জানায়।