হেমায়েত মাতবরের মৌসুমী পতাকা বিক্রি: সংসারে বাড়তি আয়ের উৎস

হেমায়েত মাতবর। তিনি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার শ্রীবরদি গ্রামের ছায়েম মাতবরের ছেলে। মৌসুমী পতাকা বিক্রেতা হিসাবে প্রতি বছরের মত এবারও ডিসেম্বর বিজয়ের মাস উপলক্ষে লাল সবুজের পতাকা বিক্রি করার জন্য গত ১ ডিসেম্বর জয়পুরহাটে আসেন এবং জেলার পাঁচ উপজেলায় ঘুরে পতাকা বিক্রি করে থাকেন। 

জেলার বিভিন্ন হাট বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফেরি করে পতাকা বিক্রি করেন তিনি। জয়পুরহাট শহরের রেলগেট ফলপট্টি এলাকায় পতাকা বিক্রি করার সময় কথা হয়। এ প্রতিবেদককে হেমায়েত মাতবর জানান, সে পেশায় একজন কৃষক। সারা বছর সংসারের কাজকর্ম করলেও এই সময়টাতে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে বিজয়ের মাসে জাতীয় পতাকা, মাথায় এবং হাতে বাঁধার ব্যাচ ও বিজয় দিবসের অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করে থাকেন। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ব্যবসা চলে। সেই সাথে এবার যোগ হয়েছে জাতীয় নির্বাচন তাই বেচা বিক্রি একটু ভালোই হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পতাকা বিক্রেতা হেমায়েত মাতবর।

দলীয় প্রতীক সম্বলিত ব্যাচ গুলোও ভালই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় বলে জানান তিনি। এতে করে গত কয়েক দিনে পতাকা বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ১০ থেকে ১৩ হাজার টাকার মত। আর এই বিজয় নিশান কাঁধে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতে ভালোই লাগে তার। তিনি জানান, ৬ ফুটের একটি পতাকা বিক্রি করছেন ১৫০ টাকা, ৫ ফুট ১০০ টাকা, সাড়ে ৩ ফুট ৮০ টাকা, আড়াই ফুট ৫০ টাকা, দেড় ফুট ৩০ টাকা আর ১ ফুট ২০ টাকা এবং ফিতা আর ব্যান্ড বিক্রি করছেন ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

সারা বছর এদের দেখা না মিললেও হেমায়েত মাতবরের মত বিজয়ের মাসে শহর থেকে গ্রামে হাট বাজারে দেখা মেলে ৮/১০ফুট লম্বা বাঁশে বেঁধে বিক্রি করা এসব মৌসুমী পতাকা বিক্রেতাদের। রয়েছে নানা আকারের পতাকা এবং পতাকার লোগো সংবলিত মাথা ও হাতে বাঁধার ব্যান্ড। পতাকার মধ্যে বর্তমান লাল-সবুজ জাতীয় পতাকা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন লাল-সবুজের মাঝে হলুদ মানচিত্র আঁকা পতাকা ও ব্যাচ। এবার জাতীয় নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা থাকায় এসবের সাথে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দলের প্রতীক সম্বলিত ব্যাচও। 

স্থানীয়রা বলেছেন, বিজয়ের মাসে অনেকেই বাড়ির ছাদে, শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সামনে এমনকি গাড়িতেও জাতীয় পতাকা ওড়ান। এর ফলে বিজয়ের মাস এলেই জাতীয় পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়। অনেক মানুষ দর্জির দোকানে গিয়ে পতাকা বানিয়ে নেয়ার চেয়ে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে সহজেই কিনছে তাদের চাহিদা মত পতাকা সহ অন্যান্য জিনিস। এই সুযোগে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে জাতীয় পতাকা বিক্রি করছেন। শুধু পতাকা নয়, হাতে ও মাথায় বাঁধার মতো লাল-সবুজ ব্যাচও বিক্রি করছে। আর ১৬ ডিসেম্বরে লাল-সবুজ পতাকা হাতে দেখা মেলে অসংখ্য শিশু- কিশোরদের। তবে অনেকে মন্তব্য করেন যে জাতীয় পতাকা গুলো সঠিক মাপ অনুযায়ী তৈরি করা হয় কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা দরকার।

 



শাকিল/সাএ