‘আরএসএস জাতিগত জনগণনার বিরোধী নয়’‌, একেবারে ঘুরে গিয়ে মন্তব্য সংঘের নেতার

এবার ডিগবাজি খেল আরএসএস। আজ, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা কাস্ট সেনসাস বা জাতি জনগণনার বিরোধী নয়। তবে সার্বিক সমাজের উন্নয়ন ঘটলে তার উপর এটা কার্যকর করা যায়। একইসঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক সম্প্রীতি এবং একতায় যেন কোনও ক্ষতি না হয়। আরএসএসের এমন আশ্চর্যজনক ডিগবাজি খাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আসলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এই জাতি জনগণনার উপর জোর দিয়ে প্রচার করছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির তুলোধনা করছেন।

তারপরই আরএসএসের এমন পাল্টি দেখে সবাই বিস্মিত। আগে তারা এই নিয়ে বরাবর বিরোধিতা করে এসেছে। গত মঙ্গলবার আরএসএসের শীর্ষ নেতা শ্রীধর ঘাড়েজ একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন। যেখানে বিজেপি নেতারা ছিলেন এবং সিন্ধে গোষ্ঠীর শিবসেনা বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, জাতি জনগণনার ক্ষেত্রে সংঘের আপত্তির কারণ হল, এতে কোনও লাভ নেই। বরং ক্ষতি দেখা যায়। এদিকে রাহুল গান্ধী বারবার প্রচার করছেন, মহিলাদের ক্ষমতায়ন করতে গেলে জাতিগত জনগণনা করা উচিত। কেন্দ্রীয় সরকার কেন তা করছে না?‌ আসলে কেন্দ্র ভাঁওতা দিতে চায়।

অন্যদিকে এই মন্তব্যে আরএসএসের অস্বস্তি বাড়তে থাকে। ঘরে–বাইরে চাপের মুখে পড়ে আরএসএসের পাবলিসিটি ইনচার্জ আনন্দ আম্বেদকর বলেন, ‘আরএসএস জাতিগত জনগণনার বিরোধী নয়। কিন্তু এটা সামগ্রিক সমাজের উন্নয়ন ঘটাতে করা উচিত। যেখানে নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক সম্প্রীতি এবং একতার উপর কোনও ক্ষতি নেমে আসবে না। আমরা বিশ্বাস করি জাতি জনগণনা করা উচিত সমাজের সর্বব্যাপী অগ্রগতির জন্য। যেখানে দায়িত্ব নিতে হবে যাতে কোনওভাবেই সামাজিক সম্প্রীতি ও অখণ্ডতা বাধা না পায়।’‌

আরও পড়ুন:‌ রাজ্যপালের ফরমানকে ‘‌ডোন্ট কেয়ার’‌, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন হচ্ছে, খুশি ব্রাত্য

এছাড়া বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে নানা জাতের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বাজিমাত করতে চায় বিজেপি। এই আবহে জাতিগত জনগণনার বিরোধিতা করলে সেটা ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হবে। তাই এমন হাওয়া মোরগের মতো ঘুরে গেল আরএসএস। কারণ আদিবাসী, তফসিলি জাতি–উপজাতি, কৃষক সম্প্রদায়, দলিত সম্প্রদায় এমনকী পিছড়ে বর্গের প্রার্থী দাঁড় করাতে চায় বিজেপি। আর বিজেপিকে পিছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে আরএসএস। তাই আনন্দ আম্বেদকরের বক্তব্য, ‘‌আরএসএস প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে হিন্দু সমাজের জন্য। যেখানে কোনও বৈষম্য থাকবে না। আর তার ভিত্তি হবে সম্প্রীতি এবং সামাজিক ন্যায় বিচার। উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়ন হোক সমাজের প্রান্তিক অংশের মানুষজনের।’‌