Delhi High Court: নাবালিকাকে অপহরণের অভিযোগ, আইন দিয়ে আটকানো যায় না ‘ট্রু লাভ’ বলল দিল্লি হাইকোর্ট

কঠোর আইন বা প্রশাসনের পদক্ষেপের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে হওয়া ‘সত্যিকারের প্রেম’কে আটকানো যায় না। এক মামলার পর্যবেক্ষণে বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। 

নয় বছর আগে এক কিশোরী এক কিশোরের সঙ্গে পালিয়ে যায়। তার পর তারা বিয়ে করে সংসার শুরু করে। কিন্তু নয় বছর পর ওই কিশোরের বিরুদ্ধে কিশোরীর পরিবার তাদের নাবালক মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের দিল্লি হাইকোর্টে। সেই মামলার পর্যবেক্ষণে এই মন্তব্য করেছে আদালত। একই সঙ্গে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।   

রায়দানের সময় আদালত বলে, এক কিশোর দম্পতি, যারা একে অপরকে বিয়ে করে সাংসার করছে, দেশের আইন মেনে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বা রাষ্ট্রের পদক্ষেপকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে মাঝে মাঝে আদালতকেই সংশয়ের মধ্যে পড়তে হয়। 

পড়ুন। ‘সরকারি বাসভবন খালি করুন’, মহুয়া মৈত্রকে দ্বিতীয় নোটিশ, মঙ্গলের মধ্যে চাই জবাব

বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা বলেন, ‘নাবালক-নাবালিকা হলেও দুইজনের মধ্যে যদি সত্যিকারের ভালবাসা থাকে, তাহলে রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ করে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারসাম্যের কথা চিন্তা করতে হয়েছে আদালতকে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে পালিয়ে গিয়ে মুসলিম রীতি মেনে বিয়ে করেছিলেন ওই কিশোর-কিশোরী। ছেলেটির বাবা বিয়ে মেনে নিলেও মেয়েটির বাবা তা মেনে নেননি। তিনি ছেলেটির বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। থানায় এফআইআরের ভিত্তিতে পুলিশ যখন তাদের ধরতে যায়, জানা যায় মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পুলিশ ছেলেটিকে গ্রেফতার করে। বাবা-মা জোরাজুরিতে মেয়েটি গর্ভপাত করাতে রাজি হয়নি, সে বলে শিশুটি তাদের ‘ভালবাসার ফল’। 

তিন বছর জেল খাটার পর ২০১৮ সালের এপ্রিলে জামিন পায় ছেলেটি। পরবর্তীকালে, তাদের আরও একটি কন্যা সন্তান হয়। 

আদালত বলে, এই দম্পতি দুটি কন্যা সন্তন রয়েছে। তাই এফআইআরটি বাতিল না হলে, মেয়ে দুটির ভবিষ্যতের ক্ষতি হবে। এর ফলে ন্যায় বিচারের ধারনাটাই বাতিল হয়ে যাবে।

 আদালত বলে ন্যায় বিচারের দাঁড়িপাল্লায় অঙ্কের সূত্র সব সময় খাটে না। অনেক সময়, পাল্লার এক পাশে থাকে আইন থাকলে, অন্য পাশে থাকে কোনও শিশু, তার বাবা-মা এবং পরিবারের সদস্যদের সুখ এবং ভবিষ্যত। এরপর বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা মামলাটি খারিজ করে দেন।