ঘন কুয়াশায় প্রভাব গঙ্গাসাগর যাত্রায়, মকর সংক্রান্তিতে মনস্কামনা পূরণে পুণ্যার্থীদের ভিড়

মকর সংক্রান্তির সকাল শুরু হয়েছে ঘন কুয়াশা দিয়ে। আর তার প্রভাব পড়েছে বিমান, রেল, সড়ক এবং জলযান যোগাযোগ ব্যবস্থায়। তার জেরে একদিকে কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান ওঠানামা থমকে গিয়েছে। অপরদিকে বন্ধ গঙ্গাসাগরমুখী বাস, ভেসেল এবং ট্রেন ধীরে চলছে। তাতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। যদিও আজ মকর সংক্রান্তিতে মনস্কামনা পূরণে গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের উদ্দেশে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের ভিড় দেখা গিয়েছে। ভিড় উপচে পড়ছে সৈকতে। সাগরে স্নানের মাহেন্দ্রক্ষণ সকাল ৯টা ১৩ মিনিট। যদিও কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই রবিবার মাঝরাত থেকে শুরু হয়েছে স্নান। চলবে আজ রাত ১২টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত।

এদিকে সাগরে স্নান করে কপিল মুনির আশ্রমে আজ, সোমবার পুজো দেবেন লক্ষাধিক পুণ্যার্থীরা। আর তাই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে মেলা চত্বর এবং সংলগ্ন এলাকা। একাধিক পুলিশ ক্যাম্প গঙ্গাসাগর জুড়ে তৈরি করা হয়েছে। আকাশপথে এবং জলপথে চলছে জোরদার নজরদারি। উপকূলরক্ষী বাহিনী, এনডিআরএফ, সিভিল ডিফেন্স–সহ প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। ড্রোন উড়িয়ে স্পিড বোট এবং হোভার ক্রাফটে চড়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও নৌসেনা। কিন্তু ঘন কুয়াশার জেরে এখানে সমস্ত যানবাহন ধীরে চলছে। আবার বহু যানবাহন বাতিল করা হয়েছে। সুতরাং মকরের দিনে চাপে পুণ্যার্থীরা।

অন্যদিকে ঘন কুয়াশার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সড়ক ও জলযান যোগাযোগ ব্যবস্থায়। সকালে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে কুয়াশার জেরে গঙ্গাসাগর থেকে কচুবেড়িয়ার মধ্যে বাস পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়েছে জেলা প্রশাসন। আবার কাকদ্বীপ থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে যে ভেসেল পরিষেবা চলাচল করে সেটিও বন্ধ রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ রাখতে হয়েছে নামখানা পয়েন্টের লঞ্চ পরিষেবাও। এই কথা পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের মাধ্যমে ঘোষণাও করা হচ্ছে। বেলা বাড়লে পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে। প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যেই আজ, সোমবার গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তির স্নান। শীত উপেক্ষা করেই পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়ছে।

আরও পড়ুন:‌ এক ডজন ডিমের দাম ৪০০ টাকা, চিকেন–পিঁয়াজের মূল্য আকাশছোঁয়া হওয়ায় নাভিশ্বাস পাক নাগরিকদের

এছাড়া ভিড়ের সম্পর্কে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, রবিবারই মেলায় পৌঁছে গিয়েছেন ৪৫ লক্ষ পুণ্যার্থী। সংখ্যাটা ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে। ভোরের আলো ফুটতেই সাগরে ডুব দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। তবে ঘন কুয়াশা চাদরে ঢেকেছে গোটা জেলা। তাই রেল–সড়কপথে যান চলাচল স্বাভাবিকভাবে থমকে গিয়েছে। ধীর গতিতে চলছে রেল–যানবাহন। তার মধ্যেও নানা বয়সের নানা মুখ, নানা ভাষার পুণ্যার্থীরা হাজির হয়েছে। পুণ্যলাভের আশায় হাজার হাজার মাইল ছুটে আসা ভক্ত, সন্ন্যাসী, দেশি–বিদেশি অতিথির দল হাজির হয়েছে। সব মিলিয়ে একাকার এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে। যেন মিনি ভারতবর্ষ।