উত্তরকাশীতে টানেল বিপর্যয়ের জেরে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। এরপর রূদ্ধাশ্বাস দিন কেটেছে। তারপর উদ্ধার করা হয়েছে শ্রমিকদের। তবে এবার এনএইচআইডিসিএল ও সড়ক পরিবহণমন্ত্রককে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা নির্দেশ দিয়েছেন যে বা যারা ওই বিপর্যয়ের জন্য় দায়ী তাদের দায়টা নির্দিষ্ট করুন ও তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন।
শনিবার তিনি একটা পর্যালোচনা বৈঠকে অংশ নেন। সুরঙ্গ বিপর্যয় সংক্রান্ত ওই মিটিংয়ে তিনি নানা নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর। ওই সুরঙ্গ বিপর্যয়ের ঘটনার পেছনে তদন্তের অগ্রগতি কতটা হয়েছে সেব্যাপারে খোঁজ খবর নেন। এই টানেল বিপর্যয়ের পর প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেব্যাপারেও খোঁজখবর নেন তিনি।
সূত্রের খবর, হাইওয়ে মন্ত্রকের তরফে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। আগামী দিনে এই বিপর্যয় এড়িয়ে কীভাবে কাজ করা হবে তার পুরো পরিকল্পনা জানানো হয়েছে। কোনওভাবে কোনও বিপর্যয় হলে সেখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কী উপায় সেটাও দেখা হচ্ছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য কী ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেটাও দেখা হচ্ছে।
অন্য়দিকে পরিবেশের কোনও ক্ষতি যাতে না হয় সেটাও দেখা হচ্ছে। এনিয়ে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রও মিলেছে। ঠিকাদারের তরফে কী ধরনের অবহেলা হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারের তরফে কোনও সমস্যা ছিল কি না সবটা দেখা হচ্ছে। এদিকে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও অন্তত ২১বার সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
সেই সঙ্গেই তদন্তে নেমে দেখা যায় যে কর্মীরা ওই সুরঙ্গে কাজ করছিলেন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাদের বেরিয়ে আসার মতো কোনও রাস্তা ছিল না।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ন্য়াশানাল হাইওয়ে ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড জানিয়েছে আধিকারিকদের ও কর্মচারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে যারা এই গাফিলতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ডিপিআর পরামর্শদাতাকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়াও চলছে।
মনে করা হচ্ছে এই কাজের দেখভাল ঠিকঠাক করা হত না। তার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশীর নির্মীয়মান সুড়ঙ্গে (স্বপ্নের চারধাম প্রকল্পের সিল্কিয়ারা-বারকোট টানেল) ধস নামে। ৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়েন (তিনজন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা – হুগলির পুরশুড়ার হরিণাখালির জয়দেব প্রামাণিক, পুরশুড়ার শৌভিক পাখিরা এবং কোচবিহারের তুফানগঞ্জের চেকাডোরা গ্রামের মানিক তালুকদার)। তারপর থেকেই তাঁদের উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। কিন্তু হিমালয়ের পেট থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার কাজটা একেবারেই সহজ ছিল না। বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞদের আনা হয়। আসে যন্ত্রপাতি। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চলতে থাকে উদ্ধারকাজ। তাঁদের খাবার পাঠানো হতে থাকে। কিন্তু যত সময় যাচ্ছিল, তত বাড়ছিল উদ্বেগ।
তারইমধ্যে ২১ নভেম্বর (গত সপ্তাহের মঙ্গলবার) ভোরে আটকে পড়া শ্রমিক, তাঁদের পরিবার এবং উদ্ধারকারীদের মুখে কিছুটা হাসি ফোটে। এন্ডোস্কোপিক ফ্লেক্সি ক্যামেরা দিয়ে প্রথমবার শ্রমিকদের দেখা যায়।