আর কি গতিপথ বদল করবে তিস্তা, খতিয়ে দেখতে আসছে বিশেষজ্ঞ দল

একাধিক জায়গায় গতিপথ বদল করেছে তিস্তা নদী। গত অক্টোবর মাসে সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদ ভেঙে তিস্তায় আসে হড়পা বান। এরপর বিপুল জলোচ্ছাসে ভেসে যায় দুপাড়। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল ভূমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরফল তিস্তা নদীর গতিপথও অনেকাংশে পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। স্যাটেলাইটে সেই ছবি স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। সেচ দফতরের মতে, এই পঞ্চমবারের মতো তিস্তা নদী গতিপথ বদল করেছে। একটু একটু করে ডান দিকে, বাঁদিকে বেঁকে যাচ্ছে তিস্তা নদী। এই অবস্থায় তিস্তা নদীর গতিপথ কি আর বদলাবে? তা জানতে খতিয়ে দেখবে বিশেষজ্ঞ দল। রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে আগামী মাসের মধ্যেই একটি দল আসবে। তারা তিস্তার গতিপথ পরিবর্তনের বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: গতিপথ বদলে ফেলেছে তিস্তা, কারণটা কী? ছবি দেখেই উদ্বেগে উত্তরবঙ্গ

স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়েছে, পাহাড় ও সমতল উভয় স্থানেই তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। মূলত হড়পা বানের সময় পাহাড় থেকে বয়ে যাওয়া ভারী পাথর এবং বন্যার জল কমার পরে এলাকায় জমা হওয়া বিশাল পলির কারণেই এই গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।যদিও সেচ দফতরের দাবি, এখনও তিস্তার গতিপথ প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে।আধিকারিকদের বক্তব্য, প্রথমে নদীর গতিপথ যখন বদলাতে শুরু হয় তখন বোঝা যায় না কতটা বদলাবে। তবে ধীরে ধীরে বদলে যায়। এর জন্য অনেক সময় লাগে। এখনও তিস্তার গতিপথ বদল চলছে। 

সেচ দফতরের পক্ষ থেকে এই বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই এই প্রতিনিধি দল আসছে বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (উত্তর-পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক জানান, রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তারা সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে শীঘ্রই এখানে আসছেন। জানা গিয়েছে, মূলত সেবক থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত গতিপথের পরীক্ষা করে দেখবে এই বিশেষজ্ঞ দল। সাধারণত শীতকালে তিস্তায় জল থাকে না। ফলে খুব একটা গতি বদলায় না। তবে জল বাড়ায় গতি সে ক্ষেত্রে গতি পরিবর্তন হয়। শীত চলে যাওয়ার ৩-৪ মাস পর থেকে আবার জল বাড়তে শুরু করবে। বাংলার সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক মঙ্গলবার বলেছেন, গত অক্টোবর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে হড়পা বানের পর বাংলার আটটি জায়গায় গতিপথ পরিবর্তন করেছে তিস্তা। এ ধরনের পরিবর্তনের কারণে তিস্তার তীর বরাবর কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই পরিবর্তিত স্থানগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।