Suvendu on atrocities on Women in WB: ‘বাংলার সীতাদের খোঁজ নিন…’, ‘সিয়া-রাম’ বিতর্কে তৃণমূলকে তোপ শুভেন্দুর

গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে রামলালার। সেদিনই আবার কলকাতার বুকে ‘সংহতি মিছিল’ হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুদের নিয়ে সেই মিছিলে হেটেছিলেন মমতা। বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে মমতা অভিযোগ করেছিলেন, ‘বিজেপি নারী বিরোধী।’ মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, রামকে নিয়ে লাফালাফি করা বিজেপির মুখে সীতার নাম নেই কেন? প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘জয় সিয়া রাম’ ঘিরে বিতর্ক হয়েছে রাজ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান উঠেছে। যা শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছেন। আবার তৃণমূল পালটা দাবি করেছে, ধর্মীয় অভিবাদনের বদলে ‘জয় শ্রী রাম’কে যুদ্ধের স্লোগানে পরিণত করেছে বিজেপি। এই সবের মাঝেই ‘উপেক্ষিত’ হচ্ছেন সীতা। আর এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবার জবাব দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। (আরও পড়ুন: ‘তিনি নিজে কী ছিলেন?’ বিজেপির ‘সুরে’ কথা বলেও শুভেন্দুর তোপের মুখে ফিরহাদ)

শনিবার শুভেন্দু অধিকারী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘তৃণমূল রাম-নাম নিয়ে ঢপবাজি করছে। তা কেউ মানবে না। তৃণমূলরে বলুন, পশ্চিমবঙ্গের সীতাদের খোঁজ নিতে। হাসখালি, কালিয়াগঞ্জ, রামপুরহাটের সীতারা কি অপরাধ করেছে করেছে ? তাঁদের পুড়িয়ে মেরেছেন। লজ্জা লাগে না?’ উল্লেখ্য, এর আগে বাংলার রাজনীতিতে একাধিকবার ‘জয় শ্রী রাম’ বনাম ‘জয় সিয়া রাম’ বিতর্ক হয়েছিল। ‘রামভক্ত’ বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে তৃণমূল আশ্রয় নিয়েছিল ‘সীতার’ শরণে। এবার তাই পালটা ‘বাংলার সীতা’দের নিয়ে তৃণমূলকেই পালটা আক্রমণ করলেন শুভেন্দু।

এর আগে গত ২২ জানুয়ারি সংহতি মিছিল শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, বিজেপি একবারও সীতার কথা বলে না। ওরা কি নারীবিরোধী? মমতা সেদিন বলেছিলেন, ‘আপনারা (বিজেপি) তো কখনও সীতার কথা বলছেন না। সীতা ছাড়া রাম অসম্পূর্ণ। আপনারা খালি রামকে নিয়ে কথা বলছেন। আমি রামের বিরুদ্ধে নই। রাম-সীতাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আপনারা সীতাকে নিয়ে কথা বলছেন না কেন? আপনারা কি নারী বিরোধী? সীতা না থাকলে রাম হয় না। আর কৌশল্যা কোথায় গেলেন? মা না থাকলে রামের জন্ম হয় না। মায়েরা সন্তানদের জন্ম দেয়। ১৪ বছর বনবাসে সীতাই রামের সঙ্গে ছিলেন। অথচ তাঁকে নিজেকে প্রমাণ করতে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছিল। আমরা নারীর মর্যাদা জানি। তাই নারীশক্তিকে দুর্গারূপে পুজো করি। এমনকী রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার আগে রামও দুর্গা পুজো করেছিলেন।’

রাজনৈতির পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে সেদিন বিজেপিকে ‘নারীবিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন মমতা। উল্লেখ্য, রাজ্যের মহিলা ভোটের জোরেই গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে রুখে দিয়েছিলেন মমতা। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে সাহায্য করেছিল। নিজে হেরেও দলকে জিতিয়েছিলেন। এই আবহে লোকসভা ভোটেও সেই ফর্মুলাকে কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা। এদিকে শুভেন্দু পালটা আক্রমণ শানিয়ে রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া নৃশংস সব ঘটনার কথা উল্লেখ করলেন। আসলে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে হিন্দি বলয়তে মহিলাদের মধ্যে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পান মহিলারা। এই আবহে বাংলাতেও ‘নারীবিদ্বেষী’ তকমা মুছে ফেলে মহিলা ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া বিজেপি।