আবার বড় নিয়োগ হতে চলেছে বাংলায়, ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের পদে বিপুল পরিমাণ চাকরি

আবার বড় নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। টানা ১৩ বছর ধরে বাংলার নানা জেলায় বন্যপ্রাণীর হামলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭৫ জন। এই পরিবারগুলিকে ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের চাকরি দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। ২০২৪ সাল থেকেই এই নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বন দফতর। রাজ্যের একের পর এক জেলার ওই পরিবারের একজন করে সদস্যকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এই কাজ চুক্তিভিত্তিক। ফরেস্ট ভলান্টিয়াররা জঙ্গল থেকে বন্যপ্রাণ রক্ষায় কাজ করবেন। তবে রেঞ্জ বা বিটের অন্যান্য কাজও করতে হতে পারে। এই কাজের জন্য এখন মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হবে।

এদিকে চুক্তিভিত্তিক এই ফরেস্ট ভলান্টিয়ারদের পোশাক কেমন হবে, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের বন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‌বন্যপ্রাণীর হামলায় মৃতের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ তো আছেই। এরপরও রাজ্য সরকার ওই পরিবারের একজন করে সদস্যকে ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের কাজ দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা আগেই ঘোষণা করেছিলেন। এবার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’‌ রাজ্যের নানা জায়গায় পরিবারের একমাত্র আয়ের সদস্য বন্যপ্রাণীর হামলায় মারা যান। তখন সেই পরিবারে রোজগার কমে যায়। তাই আর্থিক স্বচ্ছলতা বজায় রাখতেই ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের কাজ নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়। তখনই তাতে সিলমোহর দেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে এই নিয়োগের বিষয়ে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। বন দফতর ওই ৬৭৫ জনের তালিকা তৈরি করেছে। আর তালিকা ধরেই চাকরি দেওয়া শুরু হচ্ছে। ওই তালিকায় বন্যপ্রাণীর হামলায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আলিপুরদুয়ারে। ওই জেলায় মোট ১৬৩ জন ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের চাকরি পেতে চলেছেন। আর জঙ্গলমহলের চার জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। তবে সুন্দরবনও এই তালিকা রয়েছে। এখানেও বাঘের হাতে মৃত্যুর সংখ্যা ভালই। সুতরাং রাজ্যের মোট ১৭টি জেলায় মৃতের পরিবারের একজন সদস্যকে ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের চাকরি পাবে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌খুব শিগগিরই সবার মুখে হাসি ফুটবে’‌, এসএলএসটি নিয়োগ নিয়ে বড় দাবি কুণালের

এই চাকরি পেলে মৃতদের পরিবারে আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। তাতে সংসার চালানো সম্ভব হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এটা একটা মাস্টারস্ট্রোক। কারণ এই নিয়োগ হলে জেলার প্রত্যেক পরিবারে চাকরি জুটবে। তার সঙ্গে সামাজিক প্রকল্পগুলি যোগ করলে আয়ের পথ মন্দ নয়। আর্থিক একটা স্বাচ্ছন্দ্য হবে। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৩ সালের ২৪ মে পর্যন্ত বাংলায় বন্যপ্রাণীর হামলায় যাঁরা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারকেই এই ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়া হবে। বন দফতরের তথ্য অনুযায়ী ৫৮৬ জন। আর কিছু আছে। সব মিলিয়ে চাকরি পাবেন ৬৭৫ জন।