জনগর্জনে থরহরিকম্প, অবশেষে স্বেচ্ছাবন্দি দশা থেকে বেরোলেন TMC নেতা,আটক করল পুলিশ

প্রায় চার ঘণ্টা নিজেকে স্বেচ্ছাবন্দি রাখার পর অবশেষে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে আটক করল পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁকে আটক করে মিনাখাঁ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে গ্রেফতার করা হতে পারে তাঁকে।

রবিবার দুপুর থেকে বিক্ষোভকারী মহিলাদের তাড়া খেয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন অজিত মাইতি। পুলিশের শত অনুরোধেও বেরোতে রাজি হননি তিনি। সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে বাড়ির পথ ধরলে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর তিনি ওবাড়ি থেকে বেরোতে রাজি হন। পুলিশ আধিকারিকরা অজিতকে আটক করে সরু গলি দিয়ে দ্রুত গাড়িতে তুলে রওনা দেন।

আরও পড়ুন: জনগর্জনে ডিগবাজি তৃণমূলের, অজিত মাইতিকে নিয়োগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদ থেকে সরাল দল

এদিন মন্ত্রী সুজিত বসু ও পার্থ ভৌমিকের কর্মসূচিতে যোগদান করতে গিয়েছিলেন অজিতবাবু। ফেরার পথে তাঁকে তাড়া করেন গ্রামের মহিলারা। প্রাণ বাঁচাতে একটি বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েন অজিতবাবু। বাড়ির মালিক এক বৃদ্ধ। তিনি তখন স্নান করতে স্থানীয় পুকুরে গিয়েছিলেন। তখনই বাড়িতে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন অজিত মাইতি। ওদিকে অজিত মাইতিকে গ্রেফতার করার দাবিতে তখন বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মহিলারা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সংবাদমাধ্যম। ততক্ষণে স্নান করে ফিরে এসেছেন বাড়ির মালিক। ভেজা গায়ে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁপছেন বৃদ্ধ। কিন্তু থরহরিকম্প অজিত মাইতি দরজা খুলতে নারাজ। গেটের ভিতর থেকেই সংবাদমাধ্যমকে কাতর অনুরোধ করে তিনি বলেন, আপনারা যাবেন না। যা হওয়ার আপনাদের সামনেই হোক।

তিনি বলেন, লোকে আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করছে। আমি যে তার জবাব দেব তার আগেই ওরা পিটিয়ে মেরে দেবে। আমাকে ২০১৯ সালে মারধর করে সিরাজ ডাক্তারের লোকজন তৃণমূলে যোগদান করতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু ওদের জমি দখলের ব্যাপারটা আমি জানতাম না। শেখ শাহজাহান, সিরাজদের সঙ্গে থেকে আমিও পচা আলু হয়ে গিয়েছি। আমি দলের পথে থাকতে চাই না। আমি আজই পদত্যাগ করব।

আরও পড়ুন: চিনকে ঠেকাতে বড় প্রকল্পে কাজ কেন্দ্রের, সেবক–রংপো রেল পথ তৈরিতে জোর

বেশ কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। স্থানীয়দের বুঝিয়ে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করতে থাকে তারা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। উলটে বিক্ষোভ আরও বাড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ডিআইজি বারাসত রেঞ্জ ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বসিরহাটের এসপি মেহেদি হাসান। তাঁরাও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। কিন্তু অজিতকে গ্রেফতার না করলে তাঁরা সরবেন না বলে জানিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। এর পর বাড়ির মালিককে কোনওক্রমে বাড়িতে ঢোকান পুলিশকর্মীরা।

গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁদের অমানবিক নির্যাতন করেছেন অজিত মাইতি। জমি দখল, বাড়ি ভাঙচুর, মারধর করেছেন তিনি। পুলিশকে জানালে শেখ শাহজাহান ও সিরাজের সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে নিতে বলা হত।