ইডির আর্জি নাকচ সুপ্রিম কোর্টে, স্বস্তিতে রুজিরা, মুখ পুড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার

সুপ্রিম কোর্টে আজ স্বস্তি পেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার গোপনীয়তা রক্ষা মামলায় স্বস্তি পেলেন তিনি। আবেদন প্রত্যাহার করে নিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (‌ইডি)‌। কলকাতা হাইকোর্ট রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। সেই আবেদন আজ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, সর্বোচ্চ আদালত আজ ইডির আর্জি খারিজ করে জানিয়ে দিল, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল থাকবে।

এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘‌ইডি তার অভিযানের আগে সংবাদমাধ্যমকে জানাতে পারবে না। তদন্তের ‘সার্চ অ্যান্ড সিজার’–এর সময় লাইভ করা যাবে না।’‌ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল ইডি। তাতেই মুখ পুড়ল ইডির। একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সংবাদমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে কোথাও তল্লাশি অভিযান করতে পারবে না। এই সংক্রান্ত কোনও খবর পরিবেশন করলে অভিযুক্তের ছবি ব্যবহার করতে পারবে না সংবাদমাধ্যম। চার্জশিট জমা পড়ার আগে পর্যন্ত কোনও ছবি প্রকাশ করা যাবে না।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌পিন্টুবাবু কো ইতনা গুসসা কিউ হোতা হ্যায়?‌’‌ মোদীর নতুন নামকরণ করলেন মমতা

অন্যদিকে এই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে ইডি। আর সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। এই আবেদন শুনতে এবার অস্বীকার করে সুপ্রিম কোর্ট। এমনকী আবেদন খারিজ করার আগে প্রত্যাহার করার পরামর্শ দেন বিচারপতি ঋষিকেশ রায় ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চ। তখনই আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ইডির পক্ষ থেকে আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারলে এসভি রাজু। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেহেতু কলকাতা হাইকোর্ট একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তাই এতে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে না।

এছাড়া ইডির স্পেশাল লিভ পিটিশন নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। কারণ আরও একবার কলকাতা হাইকোর্টে যেতে চায় ইডি। যদিও সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদনের কোনও জায়গাই নেই। তখনই আবেদন প্রত্যাহার করে নেন ইডির আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল এসভি রাজু। রুজিরার বক্তব্য ছিল, গোপনীয়তার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। সংবিধান মেনে রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। সেই আবেদন শুনে কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ ইডি ও সংবাদমাধ্যমের ভূমিকায় অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। অভিষেকের সংস্থা ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’–এর সূত্রে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রুজিরাকে। সেই তদন্তের মধ্যেই সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক–পত্নী। আজ কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট।