হাসপাতাল মৃত বলেছিল, স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়ে ৫ দিন বাড়িতেই মায়ের দেহ রাখল যুবক

কলকাতার রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া ঝড়খণ্ডে। পাঁচদিন ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রাখলেন ছেলে। বাড়ি থেকে বিকট দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করলে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে  মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের মাস্টারপাড়া কলোনিতে।

আরও পড়ুনঃ রবিনসন কাণ্ডের ছায়া হাওড়ায়, স্বামীর মৃতদেহ আগলে স্ত্রী

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বছর ৩০-র ওই যুবকের নাম সৌরভ উপাধ্যায়। তাঁর মায়ের নাম আশা উপাধ্যায় (৭৪)। ওই বাড়িতে যুবক মা ও মাসির সঙ্গে থাকতেন। জানা গিয়েছে, গত বছর ঘরের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিলেন আশা। তারপর থেকেই তার হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন। প্রতিবেশীরা জানান, দুই বৃদ্ধা বহু মাস ধরে বাড়ির বাইরে বের হননি। 

ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রিয়রঞ্জন সিং জানান, গত ১১ মার্চ সৌরভ তাঁর মাকে শহিদ নির্মল মাহতো মেডিক্যাল কলেজে (এসএনএমএমসিএইচ) নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু, মায়ের মৃত্যুর মেনে নিতে পারেননি সৌরভ। এরপর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে চলে যান। এমনকী মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আগে স্টেরয়েড-জাতীয় ইনজেকশন দিয়েছিলেন। এরপর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেহ সৎকার না করেই রেখে দেন। ১৫ মার্চ রাত পর্যন্ত বাড়িতে রেখে দিয়েছিলেন দেহ। এরপর তিনি আবার দেহটি এসএনএমএমসিএইচে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা মৃতদেহটি চিনতে পেরে তাকে দেহটি নিয়ে যেতে বলেছিলেন। পরের দিন তিনি মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গেলে প্রতিবেশীরা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি মারা গিয়েছেন।

এদিকে, মা বেঁচে আছেন দাবি করে সৌরভ রেগে যান। হাসপাতালে এনিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। সৌরভ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মারমুখী হয়ে ওঠেন। ভয়ে ডাক্তার এবং নার্সরা জরুরি ওয়ার্ডের ভিতরে নিজেদের বন্দি করে নেন। এদিকে, সৌরভ রাতভর স্ট্রেচারে মায়ের মৃতদেহ রেখে জরুরি ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষা করেন। পরের দিন তিনি মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যান। পরে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দিলে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।