জিটিএ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্বস্তি

জিটিএ’‌তে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্ট গিয়েছিল রাজ্য সরকার। আজ, বৃহস্পতিবার সেই রায়ের উপর সর্বোচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আগামী দু’‌সপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। আগে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। তখন তাতে স্থগিতাদেশ মেলেনি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে সেই স্থগিতাদেশ মিলল। আর তাতেই স্বস্তিতে রাজ্য সরকার।

এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের জেরে এখন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মী বেকার হয়ে পড়েছেন। সেই মামলাও চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তার উপর আবার গোটা দেশে চলছে লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে জিটিএ দুর্নীতি মামলায় স্থগিতাদেশ মেলায় বেশ খানিকটা স্বস্তির অক্সিজেন পেল রাজ্য সরকার। পাহাড় নিয়োগ দুর্নীতিতে ভুয়ো চিঠি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছিল। এবার তাতে স্থগিতাদেশ পড়ল। সুতরাং আগামী দু’‌সপ্তাহ কোনও তদন্ত করতে পারবে না সিবিআই। আর এই নিয়ে কাউকে বিড়ম্বনায় ফেলতে পারবে না সিবিআই। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও নাম জড়িয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যেরও। যদিও এইসব মিথ্যে অভিযোগ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌তৃণমূলে যোগ দেওয়া আমার মস্ত বড় ভুল ছিল’‌, ছেলের হয়ে প্রচারে বেরিয়ে ক্ষমা চাইলেন শিশির

অন্যদিকে জিটিএ’‌র অন্তর্গত প্রাথমিক, আপার প্রাইমারি এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসএসসি’‌র পরীক্ষা ছাড়াই ৭০০ জনের বেশি শিক্ষককে পাহাড়ে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। তখন বিচারপতির হাতে কিছু বেনামী চিঠি এসে পৌঁছয়। সেই ‘‌রহস্যময়’‌ চিঠির কতটা যৌক্তিকতা আছে সেটা অনুসন্ধান করতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্ত করলেও তেমন আশানুরুপ কিছু মেলেনি। বরং অনেকে হেনস্থা হচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যেতেই মিলল স্থগিতাদেশ।

এছাড়া কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর ওই একই মামলায় জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়–সহ ৮জনের নামে এফআইআর দায়ের করে রাজ্য পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে সাময়িক স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে জিটিএ এলাকায় শিক্ষক নিয়োগ শুরু করা হয়। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ২০১৯ সালের মার্চ মাসে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। প্রথমে সিআইডি তদন্ত শুরু হলেও তা থামিয়ে দেওয়া হয়। তাতে ভরসা রাখতে না পেরে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। যার উপর আজ স্থগিতাদেশ পড়ল।