শ্রীরামপুরে দিল্লি রোডের উপর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। একটি যাত্রীবোঝাই টোটোকে পিছন থেকে ধাক্কা মারল লরি। টোটোটি গিয়ে ধাক্কা মারে অন্য একটি লরিকে। দুই লরির চাপে দুমড়ে-মুষড়ে যায় টোটটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় টোটো চালক-সহ চার জনের। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে এক শিশু। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রী লক্ষ্মী সিংহ (৪০), বড় মেয়ে ঋতিকা সিংহ (১৬) এবং ছোট মেয়ে নিধি সিংহকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঋষিকেশ সিংহ (৪২)। দুর্ঘটনায় একমাত্র নিধির প্রাণ বেঁচেছে। ৯ বছরের নিধিকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও তার অবস্থার অবনতি হয়। তাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। বাকি সকলেরই মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছেন টোটো চালক শেখ হাসমত আলিও।
মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
স্থানীয় সূত্রে, দিল্লি রোড ধরে যাত্রী নিয়ে শ্রীরামপুরের দিক থেকে কোন্নগরের দিকে যাচ্ছিল একটি টোটো। শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটিতে পিছন থেকে একটি লরি ধাক্কা মারে টোটোটিতে। লরির ধাক্কার অভিঘাতে টোটোটি তীব্র গতিতে সামনে এগিয়ে গিয়ে ধাক্কা মারে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একটি লরিতে। দুই লরির চাপে পিষে যায় মধ্যে থাকা টোটোটি। নিধি সিংহ নামে ৯ বছরের একটি শিশুকে উদ্ধার করে শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদের সকলেই ঘটনাস্থলে মারা যান। জানা গিয়েছে, বাবা, মা ও দিদির সঙ্গে কোন্নগর যাচ্ছিল নিধি।
আরও পড়ুন। ঝাঁপিয়ে বৃষ্টিতে ভিজল কল্লোলিনী কলকাতা, শিলাবৃষ্টির সাক্ষী থাকল বিজয়গড়–নিউ আলিপুর
স্থানীয়দের বিক্ষোভ
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, দিল্লি রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত মহাসড়কে পুলিশি নজরদারি কম। সেই সুযোগেই রমরমিয়ে বাড়ছে বেপরোয়া যান চলাচল।
চন্দননগর পুলিশের শ্রীরামপুরের ডিসি অর্ণব বিশ্বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগেও এই জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। চন্দননগর পুলিশের এডিসিপি (ট্রাফিক) দেবাশিস সরকার বলেন, ‘পুলিশ দিল্লি রোডে যান চলাচলের উপর আরও বেশি করে নজর রাখবে। দিল্লি রোড চার লেনের হওয়ার পর তাতে ধীর গতির যান অর্থাৎ রিকশা, টোটো, সাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টোটোচালকরা তার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন।’ তারপর থেকে দিল্লি রোড দিয়ে টোটো রিক্সা চলতে শুরু করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের এই গাছাড়া মনোভাবের ফলে এই ধরনে দুর্ঘটনা হল।
আরও পড়ুন। ভোটের মধ্যেই LHB’তে রূপান্তর করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের কোচ, তুঙ্গে তরজা