Solar Storm: সৌর ঝড়ে কি বিপন্ন হতে পারে পৃথিবী? ভয়ঙ্কর তথ্য দিল আদিত্য এল-১ এবং চন্দ্রযান ২

সূর্যের অত্যন্ত সক্রিয় অঞ্চল থেকে নির্গত সৌর শিখাগুলি ভালো করে খুঁটিয়ে দেখেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সৌর ঝড়ের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাটি রেকর্ড করার জন্য ইসরো তার সমস্ত পর্যবেক্ষণ প্ল্যাটফর্ম এবং সিস্টেম সক্রিয় করেছিল। এই সময়ের মধ্যে আদিত্য এল-১ এবং চন্দ্রযান-২ গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণটি সেরেছে এবং এআর১৩৬৬৪ অঞ্চলটিকে অধ্যয়ন করে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। আর তা থেকে জানা গিয়েছে বড়সড় তথ্য।

ইসরো বলেছে যে এই ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়টি হয়েছে বিশাল এক্স-ক্লাস সৌর শিখার কারণে, যা পৃথিবীতে পৌঁছেছে। এছাড়া এম ও সি ক্লাসের আগুনও ছিল। এই সৌর শিখাগুলি যোগাযোগ এবং জিপিএস সিস্টেমগুলিকে ব্যাহত করেছে। তীব্রতার দিক থেকে, এই সৌর ঝড়টি ২০০৩ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। সূর্যের উপর আলোকিত এলাকাটি ১৮৫৯ সালে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ক্যারিংটন ইভেন্টের মতোই বড় ছিল। ম্যাসিভ এক্স ফ্লেয়ার এবং করোনাল মাস ইজেকশন (CMEs) পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে। ১১ মে সকালে এই ঘটনা ভারতকেও তুলনামূলক ভাবে কম হলেও প্রভাবিত করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং আমেরিকান অঞ্চলে এই ঝড়ের প্রভাব পড়েছে।

বায়ুমণ্ডলে ইলেকট্রনের ঘনত্ব বেড়েছে

ন্যাশনাল অ্যাটমোস্ফিয়ারিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি গাডাঙ্কির নেটওয়ার্ক দেখেছে যে, ১০ মে মধ্যরাত থেকে ১১ মে সকাল পর্যন্ত মোট ইলেকট্রনের পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু, ১১ মে সকালে তা বেড়ে গিয়েছে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। সন্ধ্যা নাগাদ ইলেকট্রনের মোট পরিমাণে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছিল। একই সময়ে, ৯ এবং ১০ মে এর তুলনায় থাম্বাতে ইলেকট্রনের পরিমাণে ১০০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৯টায় ত্রিবান্দ্রমে ইলেক্ট্রনের পরিমাণ ছিল ৮০ টিইউসি। একটি টিইউসি মানে প্রতি বর্গ মিটারে ১০১৬ ইলেকট্রন।

  • আদিত্য এল-১এবং চন্দ্রযান-২ ছাড়া বেশ কিছু স্যাটেলাইট বিপাকে পড়েছে

হাসানে অবস্থিত ইসরোর মাস্টার কন্ট্রোল সেন্টার (MCF) ইতিমধ্যেই এই ঘটনাগুলি সম্পর্কে সতর্ক ছিল, যে এই ধরনের ঘটনা মহাকাশযানের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যোগাযোগ ও অন্যান্য পরিষেবা ব্যাহত করে। ইসরো দেখেছে যে কিছু মহাকাশযান সামান্য বিচ্যুতি অনুভব করেছে। INSAT-৩DS-এর স্টার সেন্সর-২ এবং INSAT-৩DR-এর স্টার সেন্সর-৩ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া, ৩০টি জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের মধ্যে এখনও পর্যন্ত কোনও বড় ধরনের অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়নি। ইসরোর পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইটগুলিকেও গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে দেখা কোনও ঝামেলা পোহাতে হয়নি।

  • কী কী পর্যবেক্ষণ করেছে আদিত্য এল-১ ও চন্দ্রযান-২

দেশের প্রথম সৌর স্পেস অবজারভেটরি আদিত্য এল-১-এর যন্ত্র, সূর্যের তীব্র শিখার সঙ্গে প্রবাহিত সৌর বায়ু পর্যবেক্ষণ করেছে। আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকেল এক্সপেরিমেন্ট (SPEX) একটি সৌর ঝড়ের প্রচণ্ড বেগও প্রদর্শন করেছে। যন্ত্রটি দেখেছে যে সৌর ঝড়টি তীব্র ছিল এবং এটি থেকে বিশাল অগ্নিশিখা বের হয়েছে। আদিত্যর পেলোড সোলার উইন্ড আয়ন স্পেকট্রোমিটার (সুইস) প্রোটন এবং আলফা কণার প্রবাহকে ধারণ করেছে। আদিত্য এল-১ যখন ল্যাগ্রঞ্জ-১ থেকে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছিল, তখন চন্দ্রযান-২-এর অরবিটার চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় সৌর বিস্ফোরণ অনুভব করেছিল। চন্দ্রযান-২ এর পেলোড এক্সএসএম এই ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের বেশ কিছু আকর্ষণীয় ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে। এর মধ্যে বিশাল সৌর শিখাগুলিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই যন্ত্রটি প্রাথমিকভাবে এক্স-রে রশ্মিও নিরীক্ষণ করে।