এনআইডি’র ভোগান্তি কমাতে মাঠ পর্যায়ে গণ শুনানি করবে ইসি

দেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনে ও ভোগান্তি কমাতে মাঠ পর্যায়েও গণ শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।এক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে গণ শুনানি করা হবে।

রবিবার(১৯ মে) ইসির এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা যায়। 

এতে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন সংশোধন সেবা সহজিকরণের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাগণদের ক্ষমতায়ন করা হয়। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ তার আওতাভুক্ত আবেদনসমূহের সংযুক্ত দলিলাদি যাচাই-বাছাইকরন এবং প্রয়োজনানুসারে তদন্ত করতঃ আবেদনসমূহ নিষ্পত্তি (অনুমোদন/আংশিক অনুমোদন/বাতিল) করবেন।

গত ৯ মে’র মাসিক সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাগণ নিজ ও তার আওতাধীন সিনিয়র জেলা/জেলা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসসমূহ জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে কোন দিন শুনানি গ্রহণ করবেন, তার সম্ভাব্য দিনের তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এই অবস্থায়, মে মাসের মাসিক সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে মাঠ পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে
প্রতি সপ্তাহে এক অথবা দুই দিন শুনানি গ্রহণ করে অনিষ্পন্ন আবেদনসমূহ নিষ্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করা হলো। সেই সঙ্গে পত্র প্রাপ্তিরতিন কার্য দিবসের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকতা ও তাঁর আওতাধীন সকল সিনিয়র জেলা/জেলা এবং উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসসমূহে সপ্তাহে কোন একদিন বা দুই দিন শুনানি গ্রহণ করবেন তার সমন্বিত তথ্য পাঠাতে হবে।

জানা গেছে, নানা উদ্যোগের পরও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তি যেন দুরই হচ্ছে না। এক একটা আবেদন নিষ্পত্তিতে লেগে যাচ্ছে মাসের মাসের পর। ফলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) টেবিলে পড়ে আছে সাড়ে পাঁচ লাখ অনিষ্পন্ন আবেদন।

ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, আবেদন আসার পর সেগুলোর জটিলতা অনুযায়ী ক, খ, গ ও ঘ; এই চরটি ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়। এজন্য ১০ টি নির্বাচনি অঞ্চলের জন্য ১০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। এক্ষেত্রে কোনো আবেদন কোনো ক্যাটাগরিতে ফেলতে দেরি হলে সেটি নিয়ে কোনো কাজই করা হয় না। এরপর ক্যাটাগরিতে ফেললেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আবার নানা অজুহাতে সেগুলো পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেয় না৷ তদন্ত করতেও দেরি করা হয়। মূলত এসব কারণে এনআইডি সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তিতে মাসের পর মাস লেগে যায়। কোনো কোনো আবেদন বছরের পর বছর পড়ে থাকার নজিরও আছে।

বর্তমানে ইসির কাছে সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলোর মধ্যে ক ক্যাটাগরিতে এক লাখ ৩০ হাজার ৪২৬টি, খ ক্যাটাগরিতে দুই লাখ ৫১টি, গ ক্যাটাগরিতে দুই লাখ চার হাজার ২৫৫ টি ও ঘ ক্যাটাগরিতে সাত হাজার ৬৬৫টি আবেদন পড়ে আছে। এছাড়া নয় হাজার ১১৫টি আবেদন এখনো ক্যাটাগরি করা হয়নি। সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ ৫১ হাজার ৫১২টি আবেদন নিষ্পত্তি হয়নি।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনআইডি সংশোধনের আবেদনসমূহ ক্যাটাগরিকরণ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ১০ জন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রত্যেক অঞ্চল থেকে ০১ (এক) জন করে সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসার, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তা, থানা/উপজেলা নির্বাচন
কর্মকর্তা ও সহকারী থানা/উপজেলা কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ১০ (দশ) জন কর্মকর্তা, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ১০ (দশ) জন কর্মকর্তা, নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউট এর ০৫ (পাঁচ) জন কর্মকর্তা, স্মার্টকার্ড তথা আইডিইএ প্রকল্পের ০৫ (পাঁচ) কর্মকর্তার অংশগ্রহণে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী ২৬ মে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি হওয়ার কথা রয়েছে।একই সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে শুনানি করা হলে তদন্ত জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে। এনআইডি সংক্রান্ত আবেদনগুলো নিষ্পত্তিতে গতিও বাড়বে।



বাঁধন/সিইচা/সাএ