যত মানুষ আধুনিক হচ্ছে, তত মানুষের শরীরের মধ্যে বাড়ছে একের পর এক সমস্যা। আধুনিক সমাজে যে সমস্যার সম্মুখীন সবথেকে বেশি হতে হচ্ছে মানুষকে, সেটি হল বন্ধ্যত্ব বা সন্তানের বাবা-মা না হওয়ার সমস্যা। এই সমস্যা এখন দেখা যাচ্ছে ঘরে ঘরে। কম বয়সী হোক অথবা বেশি বয়সি, এই সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রয়েছে প্রায় সকলেই।
ভারতীয় দম্পতিদের মধ্যে বন্ধ্যত্বের হার কত
সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ভারতের প্রায় ২৭.৫ মিলিয়ন দম্পতি বন্ধ্যাত্বের শিকার। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বিবাহিত দম্পতি এই সমস্যায় ভুগছেন। যারা দেরি করে বিয়ে করছেন তারা তো বটেই, যাদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হচ্ছে তাদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে ভীষণভাবে।
(আরো পড়ুন: ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না? ট্রাই করুন ‘মিলেট’, ফল পাবেন হাতেনাতে)
কেন বাড়ছে এই সমস্যা?
মূলত অনিয়মিত জীবন যাত্রা, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া, অ্যালকোহল বা মদ্যপান খাওয়ার কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। মহিলাদের মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, এন্ডোমেট্রিওসিস, ব্লক ফ্যালোপিয়ান টিউব থাকলে সন্তান আসতে সমস্যা হয়। সন্তান না আসার লক্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম হলো অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যথা এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
পুরুষদের মধ্যে কম শুক্রাণুর সংখ্যা, দুর্বল শুক্রাণু, বীর্য পাতের সমস্যা, সন্তানের জন্ম না হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। পুরুষদের মধ্যে ধূমপান, স্থূলতা, সুগার অথবা প্রেসার থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। মূলত ৪০ শতাংশ মহিলা জনিত কারণে এবং ৪০ শতাংশ পুরুষ জনিত কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। খুব কম সময়ে এমন হয় যখন কোনও কারণ শনাক্ত করা যায় না। একে বলা হয় অব্যক্ত বন্ধ্যাত্ব।
(আরো পড়ুন:শুধু দোকানে নয়, বাড়িতেও রান্না করা হয় পোড়া তেলে, জানেন কী বিপদ ডেকে আনছেন)
কীভাবে মোকাবিলা করবেন এই সমস্যার সঙ্গে
মূলত বাড়তি ওজন কমিয়ে, পুষ্টিকর খাবার খেয়ে, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক অবসাদ কমিয়ে ফেললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুম হওয়া ভীষণ প্রয়োজন। অন্ধকারে মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত হয় মেলাটোনিন নামে একটি হরমোন, যা সঠিকভাবে নিঃসৃত না হলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
চিকিৎসা পদ্ধতি
মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব: মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের জন্য এগ ফার্টিলাইজেশন পরীক্ষা, হিস্টেরোসলপোগ্রাফি, হরমোন পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া জরায়ুর সমস্যা রয়েছে কিনা দেখার জন্য চিকিৎসকরা ল্যাপারোস্কোপি করার পরামর্শ দেন।
পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব: পুরুষদের ক্ষেত্রে জেনেটিক টেস্ট, বীর্য পরীক্ষা, টেস্টিকুলার বায়োপসি, স্ক্রোটাল আল্ট্রাসাউন্ড করতে হয়।
সমস্ত পরীক্ষার পরেও যদি সন্তান আসতে অসুবিধা হয় সে ক্ষেত্রে আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।