ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সমালোচিত সেই প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও উপ-পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর বরাবর প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগে অনিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রসঙ্গে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন আক্তারুজ্জামান নামের এক সংবাদকর্মী। অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-এ-খুদা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত তিনি বিদ্যালয়ে সম্প্রতি একজন পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে একজন মহিলা প্রার্থীকে বিভিন্ন কলাকৌশলে নিয়োগ দেন।
এছাড়াও অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ এমনকি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে অভিযোগপত্রে। সে বিষয় গুলি নিয়ে ইতঃপূর্বে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়- অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত টিম গঠন করে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান অভিযোগকারী আক্তারুজ্জামান।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত জানান, অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তার জবাব দিবেন।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম কুদরত-এ-খুদা জানান, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। গতকাল তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় সংবাদকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার একটি ভিডিও তিনি দেখেছেন এবং বিষয়টি তিনি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করেছেন। একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি কখনোই এমন আচরণ করতে পারেন না। ঘটনাটি খুবই দুঃখ জনক।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে তিনি পরবর্তী যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাজী জোবায়দা লতিফ জানান, আমার জানামতে বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগে কোন অনিয়ম হয় নি। প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তিনি পান নি।
এছাড়া সংবাদকর্মীদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের কোন বাকবিতণ্ডা হয়েছে কি না তাও তিনি অবগত নন। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থতায় ভুগছেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বিকেলে প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ দত্তের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য জানতে চাওয়ায় দুইজন সংবাদকর্মীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হেনস্তা করা হয়।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই ভাঙ্গা থানায় প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে আইনগত বিচার দাবি করে ভাঙ্গা থানায় আরও একটি লিখিত অভিযোগ দেন মো. আক্তারুজ্জামান।
শাকিল/সাএ