‘কোনও বোর্ড ছিল না’, নির্মীয়মাণ উড়ালপুল থেকে ৫০ ফুট নীচে পড়ল গাড়ি, মৃত ১, আহত ৪

ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা! একটি নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের ওপর উঠে পড়ল গাড়ি। আর তারপরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুল থেকে ৫০ ফুট নীচে পড়ে গেল গাড়ি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক মহিলার। এছাড়াও, চালক-সহ চারজন যাত্রী আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মাল ব্লকের ওদলাবাড়ি ও বাগ্রাকোটের মাঝে। সিকিমগামী ৭১৭ এ জাতীয় সড়কের ওপর উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে। সেই উড়ালপুল থেকেই নীচে পড়ে যায় গাড়িটি। নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের ওপর কীভাবে গাড়ি উঠে পড়ল? তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এক্ষেত্রে উড়ালপুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে উড়ালপুল কর্তৃপক্ষ। জানা যাচ্ছে, ঘটনার সময় গাড়ির গতি স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি ছিল। 

আরও পড়ুন: সাতসকালে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা! জাতীয় সড়কে উলটে গেল সরকারি ভলভো, মৃত ২, আহত ২০

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে এই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম নাংশেল তামাং (৩৯)। চালক ছাড়া হতাহতরা সকলেই একই পরিবারের সদস্য। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি মিরিখের বাসিন্দা। কালিম্পংয়ের চারকোল গ্রামের নাংশেল তামাংয়ের বাবারবাড়ি। সেখান থেকে তাঁরা সপরিবারে বাড়িতে ফিরছিলেন। গাড়িতে ছিলেন নাংশেলের স্বামী পবন তামাং (৪৭), মেয়ে ইয়াংকি (১৫) এবং ছেলে ইয়াংডেন। 

গাড়ির চালকের নাম নেহাল ছেত্রী। তিনি দাবি, করেছেন নির্মীয়মাণ উড়ালপুলে কোনও বোর্ড ছিল না। ফলে বোঝা যায়নি যে সেটি তৈরি হচ্ছিল। তাই উড়ালপুলের উপরে তিনি গাড়ি নিয়ে উঠে পড়েছিলেন। কিন্তু, কিছুটা যেতেই উড়ালপুল শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, ততক্ষণে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে গাড়িটি উড়ালপুল থেকে সোজা ৫০ ফুট নিচে গিয়ে পড়ে। বিকট শব্দ শুনে দ্রুত স্থানীয়রা সেখানে ছুটে আসেন। তাঁরাই প্রাথমিকভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। 

আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাংশেল তামাংকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিদের মধ্যে ইয়াংকি এবং ইয়াংডেনের আঘাত গুরুতর। তাঁদের শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় মাল থানার পুলিশ। দুর্ঘটনার পরে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মাল থানার পুলিশ।

যদিও উড়ালপুলে নো এন্ট্রি বোর্ড না থাকার কথা অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, উড়ালপুলে কাজ চলার কারণে জন্য রাস্তার বিভিন্ন জায়গাতে ব্যারিকেড দেওয়া রয়েছে। তাছাড়া গাড়িটি যখন উড়ালপুলে ঢুকে পড়ে তখন নির্মাণ কাজে যুক্ত কর্মীরা হাত নাড়িয়ে গাড়িকে দাঁড়া করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, গাড়ির গতি বেশি থাকায় তা দেখতে চালক। উড়ালপুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এদিনের দুর্ঘটনা গাড়ির গতি কমপক্ষে ১৫০ কিলোমিটার ছিল। ইতিমধ্যেই মাল থানার পুলিশ গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।