রেমালের তুমুল দাপটে লন্ডভন্ড বাংলাদেশ, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুতে আতঙ্কে মানুষজন

ঘূর্ণিঝড় রেমাল দাপট দেখাল বাংলাদেশে। লন্ডভন্ড করে দিল পদ্মাপার। বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলাগুলিতে রবিবার থেকে মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। তখন থেকেই ঝড়ের গতিবেগও বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু আজ, সোমবার তা চরম আকার নিল। মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের দাপটে খুলনা থেকে সাতক্ষীরা দাপট দেখাল রেমাল। আর তার সঙ্গে জোয়ারের জলে একাধিক নীচু অঞ্চলগুলি প্লাবিত হয়ে পড়ে। নাগাড়ে বৃষ্টি আর জোয়ারের জলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওপার বাংলার বাসিন্দারা। এমনকী এই রেমালের দাপটে বেশ কয়েকটি জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী এবং ভোলায় তিনজন মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

সময় যত এগোচ্ছে তত দাপট দেখাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ভারী বৃষ্টির জেরে প্লাবিত হয়েছে খুলনার একাধিক অঞ্চল। যদিও সেগুলি নীচু অঞ্চল বলেই জানা গিয়েছে। তার সঙ্গে ঝড়ের তুমুল দাপট থাকায় নানা এলাকায় গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। খুলনা শহর এবং জেলার বেশিরভাগ জায়গাই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। রবিবার রাত থেকে শুরু হয় ভারী বৃষ্টি। আর তাতে মুজগুন্নী, লবণচরা, মোল্লাপাড়া, টুটপাড়া, মহিরবাড়ি খাল পাড়, শিপইয়ার্ড সড়ক, চানমারী বাজার, রূপসা–সহ একাধিক এলাকা জলে তলায় চলে গিয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে খুলনা শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। আতঙ্কে কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। রাস্তাঘাট যানবাহন ও জনমানবশূন্য।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আরও একবার নরেন্দ্র মোদীকে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসাই’‌, আবার নীতীশের মুখ ফসকে বিতর্ক

রেমাল ঘূর্ণিঝড় এখানে জোর খেলা দেখাতে শুরু করেছে। ঝড়বৃষ্টির জেরে একদিকে যেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরগুনার প্রধান তিন নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। জল ফুলে উঠছে। তীব্র জলোচ্ছ্বাসে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলা শহর–সহ বাংলাদেশের উপকূলের অনেক গ্রামে জলে ঢুকে পড়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ কখন থামবে সেই ক্ষণের প্রহর গুণছেন ওপার বাংলার বাসিন্দারা। এখানের সদর উপজেলা এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের পালের বালিয়াতলী এবং বদরখালি ইউনিয়নের বাওয়ালকর এলাকায় বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। তার জেরে ১০–১২টি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

বানভাসী এই পরিস্থিতিতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন পদ্মাপারের মানুষজন। দোকান, বাজার, স্কুল, কলেজ, অফিস–কাছারি সব স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। শুনশান রাস্তাঘাটে শুধু জল আর জল। যানবাহনের দেখা নেই। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকাংশে ভেঙে পড়েছে। দু’‌চোখের পাতা এক করতে পারছেন না বাসিন্দারা। ঝড়, বৃষ্টি ও জোয়ারের জলে প্লাবিত হয়ে আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছে সকলের। আর কিছু কি অপেক্ষা করছে?‌ এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে বাংলাদেশের মানুষজনের। রবিবার দিনের চেয়ে রাতে ঝড়বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া বেশি হয়েছে। এখনও বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে চলেছে।