নিঃশব্দে চলছে ছাঁটাই। কোপ নামছে আইটি ফার্মে। চাকরি যাচ্ছে অনেকের। এইচ আরের সঙ্গে একটা দুটো মিটিং। তারপরই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে হয় আপনি কম বেতনে চলে আসুন। নয়তো আপনাকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। আপনি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিতে পারেন। এটাই বাস্তব আইটি ফার্মে।
মানি কন্ট্রোলের প্রতিবেদনে তেমনই হাড়হিম ঘটনার কথা বলা হয়েছে। এই যেমন আকাশ। বয়স ৩১ বছর। ২০২৩ সালের শেষের দিকের ঘটনা। তিনি ম্যানেজারের কাছ থেকে একটা মেল পেয়েছিলেন। একটা ভার্চুয়াল মিটিংয়ে ডাকা হয়েছিল তাঁকে। ১৫-২০ মিনিটের একটা মিটিং। আর এরপর সব শেষ।
তাকে দুটো অপশন দেওয়া হয়েছিল। হয় কম বেতনে চলে এসো। নয়তো স্বেচ্ছায় ছেড়ে দাও। তবে চার মাসের বেতন তাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রাপ্তি বলতে এই টুকুই। এরপর তিনি চাকরির খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু চাকরি মেলেনি। আসলে আকাশ একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
মানি কন্ট্রোলকে আকাশ জানিয়েছেন, আমি বলেছিলাম সেই সময় আমায় একটু সময় দেওয়া হোক। আমায় বলা হয়েছিল মিটিংয়ের মধ্যেই যা বলার বলতে হবে। এরপর আমি আমার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলি। এরপর ইস্তফা দিয়েছিলাম।
কগনিজ্যান্টেও এই ধরনের ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। শ্রীরামের ক্ষেত্রেও পরিণতি হয়েছিল আকাশের মতোই। তবে এরকমই অনেকের ঘাড়েই কোপ দেওয়া হয়েছে। চাকরি গিয়েছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটাই বাস্তব আইটি শিল্পে। অল ইন্ডিয়া আই অ্যান্ড আইটিইএস এমপ্লয়িজ ইউনিয়েনের তথ্য় অনুসারে ২০২৩ সালে অন্তত ২০,০০০ আইটি কর্মীর চাকরি গিয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। তব সংগঠনের মতে এই সংখ্য়াটা আরও বেশি হতে পারে।
একেবারে নিঃশব্দে ছাঁটাই চলে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে নতুন কোনও কাজ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি যোগ্য়তা প্রমাণ করতে পারেন না। এরপরই তাঁকে ছাঁটাই করা হয়।
এদিকে ২০২৪ সালেও প্রচুর আইটি কর্মীর ছাঁটাই হয়েছে। প্রায় ২০০০, ৩০০০ আইটি কর্মীর চাকরি গিয়েছে।
NITES প্রেসিডেন্ট হরপ্রিত সিং সালুজা জানিয়েছেন, একবার যদি কাউকে টার্মিনেট করে দেওয়া হয় তার পক্ষে আবার চাকরি পাওয়াটা খুব সমস্যার। এমনকী পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে যে এক একজন কর্মীকে ১০-১২ ঘণ্টার জায়গায় ১৪-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। সমস্ত কোম্পানির ক্ষেত্রেই একই পরিস্থিতি কম -বেশি। কাজের সময় ক্রমেই বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।