কৃষ্ণা রানির আক্ষেপ

জাতীয় নারী ফুটবল দলের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানি সরকার। ২০২২ সালের সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর চোটে পড়েন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হতে পারেননি। চায়নিজ তাইপের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচে দর্শক হয়ে থাকতে হচ্ছে। টাঙ্গাইল থেকে উঠে আসা ফুটবলারের এনিয়ে আক্ষেপ কম নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন কৃষ্ণা।

কৃষ্ণা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন- প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগের থেকে ভালো, কিন্তু এখনও পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফের ফিজিও দিয়ে আমার  চিকিৎসা চলছে। সবাই জানে ইনজুরিটা অনেক জটিল। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।

২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেকদিন দেখেন, যখন ব্যথা কমছিল না। স্যার বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া-ভারত গিয়ে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু যখন আমি  বাফুফেকে জানাই, তারা বলেছিল আর কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেকদিন তাদেরকে বলেছি ভারতে যাওয়ার কথা। কিন্তু উনারা আমার কথায় কোনও গুরুত্ব দেননি। আজ পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি। 

২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়র জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনও কোনও দলের বাইরে থাকতে হয়নি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়বো, কখনও ভাবিনি। অনেকদিন রেস্টে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি। 

চীনে যখন এশিয়ান গেমস খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটিয়েছি। ব্যাক টু ব্যাক দুটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক।

কষ্ট একটাই, কখনও কোনও টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচকে বলতে শুনলাম না কৃষ্ণা ইনজুরিতে, তাকে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করানো হোক। কারও কোনও মাথা ব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ।

অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশি দিন নেই কৃষ্ণার জন্য।

সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পরি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি।