নিউ ইয়র্কের নতুন মাঠে নতুন শুরুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ

নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টিতে আজ দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত। বৃষ্টির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচটি বাতিল হয়েছে। ফলে ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচ দিয়েই নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ওয়ার্ম আপ সেরে নিতে হবে। দুই দলের এই ম্যাচ দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হচ্ছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটির। নতুন এই মাঠে সাম্প্রতিক সময়ের ভুলগুলো শুধরে নতুন এক যাত্রা শুরু করতে চাইবে বাংলাদেশ। সেটি করতে পারলেই মূল টুর্নামেন্টের আগে আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি পাবে লাল-সবুজরা।

বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে। বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল নাগরিক টিভি ছাড়াও স্টার স্পোর্টস, আইসিসি টিভি ও ডিজনি প্লাস হটস্টারেও এই ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে।

এই ম্যাচের আগে নিউইয়র্কের ক্যান্টিগুয়া পার্কে প্রথমবারের মতো অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। নেটে ব্যাট ও বল হাতে সাকিব-শান্তরা ঘাম ঝরিয়েছেন। চোট থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন তাসকিন আহমেদ। লম্বা রানআপ নিয়ে আজ বলও করেছেন তিনি। শনিবারের প্রস্তুতি ম্যাচে তাকে দেখা না গেলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তাসকিনকে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

মূল মঞ্চে মাঠে নামার আগে বাংলাদশে দল যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় একটু আগে ভাগেই সফর করেছে। কিন্তু স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরে বিশাল ধাক্কা খেয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। র‌্যাঙ্কিংয়ের পেছনে থাকা দলটির বিপক্ষে হেরে শান্তর দল কিছুটা হলেও মনোবল হারিয়েছে। বিশ্বকাপের আগে মনোবল চাঙ্গা করতে ভারতের বিপক্ষে ভালো ক্রিকেটের বিকল্প নেই। বিশেষ করে ব্যাটারদের ফর্মহীনতা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটাররা সফল হলে কিছুটা হলেও চিন্তামুক্ত হয়ে বিশ্বকাপের ময়দানে যেতে পারবে বাংলাদেশ।

নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটি আরেক অর্থে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই মাঠেই আগামী ১০ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে তারা। স্বাভাবিক ভাবেই নতুন এই মাঠে উইকেট সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার দারুণ সুযোগ শান্ত-সাকিবদের। শান্ত অবশ্য নতুন এই ভেন্যু দেখে দারুণ খুশি। ৩৪ হাজার ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটি ঘুরে ঘুরে দেখেছেন শান্ত। যা আইসিসির ফেসবুক পেজে প্রচারিত হয়েছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাঠের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য। অদ্ভুত লাগছে। বোঝাতে চাইছি যে ইন্টারনেটে সবাই যখন দেখেছি, তখন কিছুই ছিল না (তিন মাস আগে)। এখন এটাকে সত্যিকারের স্টেডিয়াম মনে হচ্ছে।’

নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম কোনও মডিউলার স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়াম এমনভাবে ডিজাইন করা, যাতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। স্টেডিয়াম নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক আরও বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, আমি এমন কিছু আশা করিনি। তবে সামাজিক মাধ্যমে সবই দেখেছি যে উইকেট কেমন আচরণ করে, মাঠ কেমন হতে পারে। কী হতে যাচ্ছে, তা ভেবে আমরা খুবই রোমাঞ্চিত। ইস্টার্ন গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড এমন হবে আশা করিনি। মাঠটা দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে।’

বাংলাদেশ দল এই মাঠে বিশ্বকাপের একটি ম্যাচ পেলেও ভারত পাচ্ছে তিনটি ম্যাচ। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ খেলার আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটি দিয়ে উইকেটের সবকিছুই নখদর্পণে রাখতে চাইবে ভারত। যদিও বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলতে নামার আগে অনুশীলন নিয়ে অস্বস্তিতে রোহিতরা। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত বুধবার থেকে ক্যান্টিগুয়া পার্কে রোহিত শর্মার দল অনুশীলন করছে। কিন্তু অনুশীলন সুবিধা মন ভরাতে পারেনি ভারতীয়দের। শুধু মাঠের সুযোগ-সুবিধা নিয়েই নয়, খাবার নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সবকিছু ছাপিয়ে দুই দলের জন্যই নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি মাঠটি অচেনা। দুই দল চাইবে এই মাঠের সবকিছুই মূল ম্যাচের আগে জেনে নিতে। নাসাউ কাউন্টির আন্তর্জাতিক অভিষেক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে এগিয়ে থাকতে পারলে, বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে ডালাসে যেতে পারবে। শান্তদের লক্ষ্যটা তেমই!