Manoranjan Byapari: ভোট মিটতেই বিস্ফোরক মনোরঞ্জন, রাহু-কেতু, বিষাক্ত মা মনসা বলে কাদের নিশানা করলেন?

হুগলিতে বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে বলাগড়। তবে তৃণমূলের জয়ের পরেও আবারও দলের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। নাম না করে তিনি দলের কিছু নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। একইসঙ্গে তাঁকে নির্বাচনের কাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মনোরঞ্জন। বিধায়কের এই মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।

আরও পড়ুন: ফেসবুকে শুভেন্দুর প্রশংসায় মনোরঞ্জন ব্যাপারী, দলবদলের জল্পনা

নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দীর্ঘ পোস্ট করে করে মনোরঞ্জন লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ এই জন্য যে উনি (মমতা) একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে চব্বিশের লোকসভার নির্বাচনী লড়াই থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন।’ এরপরেই মমতার এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কী কারণ? সেবিষয়টিও খোলসা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি লেখেন, ‘দিদি জানতেন অন্য কেউ নয়, তৃণমূলকে হারিয়ে দেবে বলাগড় বিধানসভার অভিশাপ শনি রাহু কেতু-আর বিষাক্ত মা মনসা।’ 

মনোরঞ্জনের দাবি, তৃণমূলের এইসব নেতা নেত্রীরা বছরের পর বছর ধরে অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছে। তাই বিজেপির হয়ে কাজ না করেল তাদের হয় তিহাড় অথবা আলিপুর জেলে পাঠানো হত। কুন্তল শান্তনুর পাশের সেলে রাখা হত। তাই নিজেদের বাঁচার জন্য তারা বিজেপির প্রার্থীকে জেতানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ। মনোরঞ্জনের দাবি, এই সমস্ত নেতানেত্রীরা তৃণমূল দলটাকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এদের জন্যই অনেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে।

মনোরঞ্জন পোস্টে অবশ্য কারও নাম করেনি। তবে তাঁর পোস্ট থেকে ফের বলাগড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। যারা এই ধরনের কাজ করছে তারা বিধায়ককে পছন্দ করে না বলেও পোস্টে দাবি করা হয়েছে। মনোরঞ্জন লিখেছেন, ‘আমি কোনও অন্যায় সহ্য করিনা। যে কারণে বলাগড়ে আমার নামই হয়ে গিয়েছে এমএলএ ফাটাকেষ্ট !’

মনোরঞ্জন দাবি করেছেন, দলনেত্রী অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন ওই সমস্ত নেতাকর্মীদের জন্য দলের প্রার্থী হেরে যেতে পারেন। আর তার দোষ তাঁর ওপর চাপাতে পারেন। তাই তিনি তাঁকে নির্বাচনের কাজ থেকে দূরে সরে থাকতে বলেছিলেন। তিনি লেখেন, ‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার জন্য আমি দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।’

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। এর আগেও দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তৃণমূল বিধায়ককে। যদিও স্থানীয় সূত্র জানা গিয়েছে, দলের সেখানকার নেত্রী রুনা খাতুনের সঙ্গে মনোরঞ্জনের অনেক পুরনো বিবাদ। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতবিরোধ দেখা গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট বন্টনকে কেন্দ্র তা আরও প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই সময় মনোরঞ্জন মোটা টাকায় টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুলেছিলেন। মনসা বলতে কি মনোরঞ্জন তাঁকেই নিশান করেছেন? তাই জল্পনা শুরু হয়েছে।