লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট, সিপিএম সমর্থকদের সতর্ক করলেন সেলিম

দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ইন্ডিয়া জোটে সামিল হয়েছিল সিপিএম থেকে তৃণমূল, সমস্ত বিজেপি-বিরোধী দলই, কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পরই বঙ্গ সিপিএম আর তৃণমূলের পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রকাশ্যে। এবারের নির্বাচনেও কোনও কেন্দ্রে জয়লাভ করতে পারেনি সিপিএম। একটি মাত্র আসনে দ্বিতীয় স্থানে শেষ হয়েছে তাদের নির্বাচনী লড়াই। আর ভোটে প্রত্যাশাপূরণ না হওয়াতেই বরাবরের মত সাধারণ রাজ্যবাসীকেই পরোক্ষে দায়ি করছেন সিপিএমের একাংশ কর্মী-সমর্থক। বাস্তবে জমি হারালেও বাংলার সিপিএম সমর্থকরা সক্রিয়া সোশাল মিডিয়ায়। ‘শিক্ষা নয়, ভিক্ষা চায় এই রাজ্যের মানুষ’ এমন সব পোস্ট ভাইরাল হয় ৪ তারিখ বেলা গড়াতেই। লক্ষ্মী ভাণ্ডারের মত প্রকল্পকে নিয়ে এবারও শুরু হয় ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট। তৃণমূলের দুর্নীতি সত্ত্বেও এই জয় কে ‘ভাতা দিয়ে ভোট কেনা’ বলে আক্রমণ করতে থাকেন ফেসবুক-সক্রিয় সিপিএমর সমর্থকরা।

এপ্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলছেন, ‘এই ফেসবুক বিপ্লবীরা বামপন্থী নন, তারা দলের সমর্থক মাত্র।’ সেলিম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘কেউ কেউ স্বঘোষিত বামপন্থী আছেন। স্বঘোষিত বিপ্লবী আছেন। আমরা তাঁদের বলি, ফেসবুকে বেশি বিপ্লবীয়ানা করবেন না। কেউ করে। এখানে সিপিআইএমের থেকে আশা করা যায় না যে, মহিলাদের সম্পর্কে বা এই ধরনের ভাতা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা নিন্দা করছে। কেন করবে? বামপন্থী আন্দোলন মানেই হচ্ছে গোটা বিশ্বে আমরা চাই যে, সরকার মানুষের অধিকার না দিতে পারার ক্ষতিপূরণ হিসাবে কিছুটা অন্তত ভর্তুকি দেবে।’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম সামান্য ভোটে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে এগিয়েছিলেন। কিন্তু বেলা বাড়লেই বদলাতে থাকে চিত্র। পিছিয়ে যান মহম্মদ সেলিম, ঝড়ের বেগে এগোতে থাকেন তৃণমূলের আবু তাহের খান। ফল ঘোষণা হতে দেখা যায় মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে আবু তাহের খান পেয়েছেন ৪৪.৩ শতাংশ ভোেট আর সেলিম হয়েছেন দ্বিতীয়, পেয়েছেন ৩৮.৬ শতাংশ ভোট।

রাজ্য সম্পাদকের এই বক্তব্য অবশ্য বিশেষ প্রভাবিত করেনি সোশাল মিডিয়ার সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের। কেউ কেউ ভাতাকে ভিক্ষার সঙ্গে তুলনা করার প্রতিবাদও অবশ্য করেছেন, সেলিম বলেন, ‘এগুলি নিয়ে যারা কটাক্ষ করছেন তারা বামপন্থী নন, তারা হতে পারেন সমর্থক। আমাদের দায় আমাদের কথা তাদের কাছে নিয়ে যাওয়া, আমাদের মাধ্যমগুলি দিয়ে বা সরাসরি তাদের কাছে গিয়ে। কেউ কেউ উগ্র সমর্থক আছেন। তাদের আমরা সমর্থক থাকতে বলব। উগ্রতা কমাতে বলব।’

রাজ্যের শাসক দলের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক অস্ত্র হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। সম্প্রতি এই প্রকল্পে মহিলাদের আর্থিক সাহায্য দ্বিগুণ করা হয়েছে। সৃজন তাঁর প্রচার চলাকালীন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে সদর্থক মন্তব্যই করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা যদি কোনওদিন সুযোগ পাই, মানুষের টাকা যতটা কাজে লাগানোর পুরোটা কাজে লাগাব, তাতেআজকে যিনি হাজার টাকা পাচ্ছেন, তিনি আগামী দিনে ২০০০ টাকা পাবেন হতেই পারে।’ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনী পরাজয়ের হতাশা দুঃখ থেকেও সিপিএমের একাংশ সমর্থক বিরূপ মন্তব্য করছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মত প্রকল্প নিয়ে, যা ক্ষতি করছে বামপন্থী রাজনীতিরই।