‘‌রাজ্যপালের এখানে থাকার প্রয়োজন কী?’‌ প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বনাম রাজ্য সরকার সংঘাত দেখেছে বাংলার মানুষ। আর ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যপালের ভূমিকাও সামনে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ওই অ্যাকশন মুড ছেড়ে এখন ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি এবং ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই রাজভবন থেকে তিনি বেশি বের হচ্ছেন না। এমনকী অ্যাকশন মুডে দেখা যাচ্ছে না। এই আবহে বামফ্রন্ট, তৃণমূল কংগ্রেসের পর এবার বিজেপির নিশানাতেও পড়লেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা শুরু হয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। তার মধ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজভবনের গেটে আটকে দেয় পুলিশ। ঢুকতে দেয়নি। তা নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিয়মরক্ষায় একটি চিঠি পাঠিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিবকে। তার বেশি কিছু করতে দেখা যায়নি। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‌ভোট পরবর্তী হিংসা ঠেকাতে আমরা ব্যর্থ। কারণ পুলিশ এখানে আমাদের কথা শুনবে না। তারা কদর্য ভূমিকা পালন করছে। একাধিক জায়গায় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে। সংবিধানের রক্ষাকর্তা রাজ্যপালের বিষয়টি দেখা উচিত।’‌

আরও পড়ুন:‌ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি, কোথা থেকে মিলল?‌

যদিও আজ, শুক্রবার ভোট পরবর্তী হিংসায় মাহেশ্বরী ভবনে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। কিন্তু এমন আবহে রাজ্যপাল থাকার অর্থ কী? চাঁচাছোলা ভাষায় প্রশ্ন তোলেন শমীক। ক্ষোভের সুরে শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‌তিনি সরকারের কেউ নন। বিধানসভার সদস্য নন। তিনি সমস্ত সরকারি কাজকর্মের হিসাব নিচ্ছেন, অর্ডার দিচ্ছেন এবং তাঁকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সমস্ত পুলিশকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাহলে এখানে রাজ্যপালের ভূমিকা কী? তাঁর এখানে থাকার প্রয়োজন কী? এটাই এখন সাধারণ মানুষের কাছে সবথেকে বড় প্রশ্ন।’‌

বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের এমন মন্তব্য নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন। বিজেপি নেতারা আক্রমণ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। বৃহস্পতিবার ২০০ কর্মীকে নিয়ে রাজভবনে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর দাবি অনুযায়ী, সকলেই ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার। কেউই ঢুকতে পারেননি রাজভবনে। কারণ আগেই আটকে দেয় পুলিশ। তাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এই ঘটনার কথা রাজ্যপালের কানে যেতেই চিঠি লেখেন স্বরাষ্ট্রসচিবকে। ১০ পাতার বিবৃতিও দেওয়া হয় রাজভবনের পক্ষ থেকে। রাজ্যের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে রিপোর্ট।