পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি, কোথা থেকে মিলল?‌

তারিখটা ছিল ২০২২ সালের ২৩ জুলাই। বাংলার তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হন। তার পর তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাটে টাকার পাহাড় মেলে। নগদ টাকার পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা, সোনা মিলিয়ে প্রায় ৬০ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। কিন্তু সম্পত্তি বা সম্পদের পরিমাণ আজও যেন শেষ হচ্ছে না। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। কলকাতার পাটুলি থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি জায়গায় তাঁর জমি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ওই তালিকায় আছে বোলপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের নামও। ওখান থেকেও বেশ কিছু জমি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ থাকার পরও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন পার্থ। যার জন্য তিনি জামিনও চান বারবার। কিন্তু তা মেলেনি। এখনও প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। ইতিমধ্যে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার জেরে চিকিৎসা করাতে চেয়ে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছে প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ। এই আবহে নামে–বেনামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, কলকাতার পাটুলি, বীরভূমের বোলপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর–সহ একাধিক জায়গা থেকে বেশ কিছু জমি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আর কিছু বলব না’‌, নয়াদিল্লি থেকে নিজের মুখে লাগাম টানলেন দিলীপ ঘোষ, কোন অঙ্কে?‌

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর, যে সম্পত্তি এখন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেটা সরাসরি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে নয়। তবে সেই সম্পত্তিগুলি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বলেই তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন ইডির অফিসাররা। তার মধ্যে শুধু বোলপুরেই অন্তত পাঁচটি সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। যার বাজারদর কয়েক কোটি টাকা। জমি ছাড়াও একাধিক সংস্থার কাছ থেকে নগদ টাকাও উদ্ধার করেছেন ইডির অফিসাররা। যা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বলে মনে করা হচ্ছে। নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে এই জমি, সম্পত্তি এবং টাকার যোগ আছে বলে ইডির দাবি।

এছাড়া বাজেয়াপ্ত হওয়া এই কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির অধিকাংশই পার্থর ঘনিষ্ঠের নামে রয়েছে। এই বিষয়ে আবার প্রাক্তন মন্ত্রীকে জেরা করতে পারেন তদন্তকারীরা বলে মনে করা হচ্ছে। এবার পাটুলি, বোলপুর এবং বিষ্ণুপুর থেকে যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তাতে ৬০ কোটির অঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি ইডির। এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় মোট ১৩৫ কোটি টাকার নগদ এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন ইডি অফিসাররা। প্রাথমিক এবং নবম–দশম, একাদশ–দ্বাদশের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে মোট ৩৬৫.৬০ কোটির সম্পত্তি।