সিপিএম বহিষ্কার করতেই কাছে টানছে তৃণমূল কংগ্রেস, কে এই পঙ্কজ রায় সরকার?

দুর্গাপুরের দুঁদে নেতা পঙ্কজ রায় সরকারকে এবার বহিষ্কার করল সিপিএম। লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম শূন্য পাওয়ার পরও এমন পদক্ষেপ সবাইকে চমকে দিয়েছে। কারণ রবিবার সন্ধ্যায় নাকি এই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ যোগদান করবেন তৃণমূল কংগ্রেসে বলে খবর পেয়েছে সিপিএমের কর্তাব্যক্তিরা। তবে এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও। রাজ্যের প্রাক্তন শিল্প–বাণিজ্য মন্ত্রী নিরুপম সেনের ডাকে সাড়া দিয়ে ইসিএলের চাকরি ছেড়ে সিপিএমের হোলটাইমার হয়েছিলেন। এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন পঙ্কজ রায় সরকার বলে সূত্রের খবর। এই নেতা পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।

এদিকে দুর্গাপুরে সিপিএমের সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব ছিল পঙ্কজ রায় সরকারের কাঁধে। একইসঙ্গে দলের আইটি সেলের দেখাশোনা করতেন এই মেধাবী নেতা। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা অনেকের নজর কেড়েছিল। কিন্তু কোনও কিছুই তো চিরস্থায়ী হয় না। পরিবর্তনই তো জীবনের নিয়ম। আর তাতেই বিশ্বাস করেন পঙ্কজ রায় সরকার। এই নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘‌নিস্তব্ধতা বলে এই ভূদেশে কিছু আছে না কি?’‌ পরে চর্চা জোরকদমে শুরু হতেই সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন পঙ্কজ রায় সরকার। এই বিষয়ে জেলা কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দলের গাইডলাইন না মানার জন্য জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারকে বহিষ্কার করা হল।’‌

আরও পড়ুন:‌ রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, শীর্ষস্থানে পৌঁছে গেল মালদা, দক্ষিণবঙ্গে আলোড়ন

অন্যদিকে সিপিএমের এখন যা অবস্থা তাতে বহিষ্কার করলে কোনও ক্ষতি হবে না। কারণ শূন্যের নীচে কোনও সংখ্যা হয় না। তাই ২০১৯ সাল থেকে শূন্যতা শুরু হলেও সেই খরা কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিপিএম। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেও দেখা গেল, সিপিএম শূন্য। আজ, রবিবার রানিগঞ্জে জেলা সিপিএম দফতরে একটি বৈঠক হয়। তারপরেই তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর। আসলে সিপিএম যে গাইডলাইন ঠিক করেছিল সেটা মেনে নেননি পঙ্কজ রায় সরকার। বরং সেটার বিরোধিতা করেছিলেন। সুতরাং তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়। সূত্রের খবর, দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেন পঙ্কজ। শনিবার নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। তার পর আজ তাঁকে বহিষ্কার করে সিপিএম।

এছাড়া স্থানীয় সূত্রে খবর, পঙ্কজ রায় সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। দুর্গাপুর অঞ্চলে তাঁর একটা ভাল প্রভাব আছে। আইএনটিটিইউসি’‌র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কের কথা অনেকেই জানেন। জেলার ডাকসাইটের নেতা পঙ্কজের সঙ্গে পুলিশ–প্রশাসনেরও সুসম্পর্ক রয়েছে। আসলে কোনও আন্দোলন দানা বাঁধার আগেই আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে ফেলতেন পঙ্কজ রায় সরকার। তৃণমূল কংগ্রেস তাঁর এই সাংগঠনিক দক্ষতাকেই কাজে লাগাতে চাইছে। সামনেই দুর্গাপুর পুরসভার ভোট আছে। সেখানে পঙ্কজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ফসল ঘরে তুলতে চান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।