জিতলেও হতশ্রী পারফরম্যান্সে শেষ হলো পাকিস্তানের বিশ্বকাপ  

ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি পাকিস্তান। কিন্তু গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর অনেক রদ-বদল হয়েছিলো। ধারণা করা হচ্ছিলো, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হয়তো পুরনো ব্যর্থতাগুলো পেছনে ফেলতে পারবে পাকিস্তান। কিন্তু প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য। রবিবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কোনোরকমে জিতে বিশ্বকাপের মঞ্চ ছাড়তে হচ্ছে বাবর আজমদের। এদিন আইরিশদের ১০৬ রানে থামিয়ে দিয়ে ৭ বল আগে ৩ উইকেটে কোনোরকমে জয় পায় পাকিস্তান।

ফ্লোরিডার লডারহিলে বৈরী আবহাওয়ায় এবারের বিশ্বকাপে এর আগে তিন ম্যাচের তিনটিই পরিত্যক্ত হয়েছে। কোনোটিতে একটা বলও মাঠে গড়ায়নি। সেখানে আজ পাকিস্তান-আয়ারল্যান্ডে ম্যাচে ভিন্ন এক লডারহিলকে দেখা গেলো। কোনও সমস্যা ছাড়াই পুরো ম্যাচটি ঠিকঠাকভাবে শেষ হয়েছে। আজকে দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিলো নিয়মরক্ষার। পাকিস্তান জিতলেও সুপার এইটে কোয়ালিফাই করতে পারেনি। এই গ্রুপ থেকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সুপার এইটে উঠেছে। ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তানকে বিদায় নিতে হয়েছে। অন্যদিকে কানাডার ৩ ও আইরিশরা ১ পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইটে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে।

রবিবার লডারহিলে মোহাম্মেদ আমির ও শাহেন শাহ আফ্রিদি মিলে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে উঠেছিলো। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই আইরিশদের ৩২ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেন পাকিস্তানের দুই পেসার। তবে ৩২ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারানোর পর গ্যারেথ ডেলানি ও মার্ক অ্যাডায়ার মিলে ৩০ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে দলের স্কোরকে একশো পেরুতে সহায়তা করেন। শেষ দিকে জশ লিটলির ১৮ বলে ২২ রানের অপরাজিত ইনিংসের উপর দাঁড়িয়ে আইরিশরা ১০৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে। ডেলানি সর্বোচ্চ ৩১ রানের ইনিংস খেলেন। অ্যাডায়ারের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রানের ইনিংস।

পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ২২ রানে নেন তিনটি উইকেট। অবসর ভেঙ্গে বিশ্বকাপ দলের সদস্য হওয়ার মোহাম্মদ আমির নেন ১১ রানে দুটি উইকেট। তবে দলের সেরা বোলার স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। তিনি ৮ রান খরচায় শিকার করেন তিনটি উইকেট।

১০৭ রানের মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে ধীরস্থিরভাবেই শুরু করেছিলো পাকিস্তান। তবে একটা সময় বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারতের বিপক্ষে সহজ ম্যাচটিতে হেরে যাওয়া পাকিস্তান। প্রথম দশ ওভারে ৫৭ রান তুলতেই পাকিস্তান হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট। জিততে গেলে তখন প্রয়োজন ছিল ৬০ বলে ৫০ রান। ১৫ ওভার শেষে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩০ বলে ২৬ রান, হাতে চার উইকেট– এই অবস্থা থেকে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিল সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।

১৮ ওভার শেষে ১২ বলে ১২ রান যখন সমীকরণ। ক্রিজে তখন শাহেন শাহ আফ্রিদি ও বাবর আজম! আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা অলরাউন্ডার ডেলানিকে দুই ছক্কা মেরে ৭ বল আগেই খেলা শেষ করে ফেলেন শাহেন। বাবর ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন। আব্বাস আফ্রিদি, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সিয়াম আইয়্যুব প্রত্যেকের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রানের ইনিংস। শাহেন দুই ছক্কায় ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।

আইরিশ বোলারদের মধ্যে ব্যারি ম্যাকার্থি ১৫ রানে তিনটি উইকেট নিয়েছেন। কার্টিস ক্যাম্পার দুটি এবং বেন হোয়াইট ও মার্ক অ্যাডায়ার নেন একটি করে উইকেট।