Kanchanjungha Express Accident Update: ‘আচমকাই বিরাট ঝাঁকুনি…তারপরই…’ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রীর

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। নীচবাড়ি ও রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে দুর্ঘটনা। সিগন্যাল ভেঙে এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছন ধাক্কা দিল মালগাড়ি। দাবি রেলের। এদিকে মালগাড়ির চালককে কার্যত কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে পুরোদমে। সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়়ছে। 

এদিকে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, মালগাড়ির চালক গাড়ি থামাননি। পেছনের গাড়ির থামা দরকার ছিল। চালকের মৃত্যু হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের মনে হচ্ছে পেছনের মালগাড়ির যে চালক ছিলেন তিনি বোধহয় ঠিকঠাক দেখতে পাননি সিগন্যাল। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা। 

এদিকে এখনও পর্যন্ত ১৫জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। 

সেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে যে যাত্রীরা ছিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতা ঠিক কেমন ছিল? 

এক যাত্রী বলেন, ট্রেনের গতি সেভাবে ছিল না।মনে হচ্ছে ২০ কিমি গতিতে যাচ্ছিল ট্রেনটা। তখনও ঘুমের মধ্য়ে ছিলাম। আচমকাই বিরাট ঝটকা। আমাদের কামরা কিছুটা পেছনের দিকে ছিল। এরপর ট্রেন থামার পরে দেখলাম এস৪ আর এস ৫ আলাদা হয়ে গিয়েছে। তার পেছনের কামরাগুলি দেখলাম উলটে গিয়েছে। সবাই চিৎকার করছিল, কাঁদছিল… 

অপর এক যাত্রী বলেন, দুর্ঘটনার পরে কেউ সহায়তার জন্য় আসেনি। নিজেরাই আমরা বেরিয়ে আসি। প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্য়ে আছি। 

কৌশিক পাল নামে এক যাত্রী বলেন, আমি এনজেপি থেকে মালদা যাচ্ছিলাম। পেছনের দিক থেকে ৫ নম্বর কামরায় ছিলাম। এরপর আচমকাই ঝাঁকুনি। প্রায় ৪০ সেকেন্ড ধরে ঝাঁকুনি। তারপর ট্রেন থামল। এরপর বাইরে দেখি পেছনের দিকে কামরাগুলি দুমড়ে গেছে। 

শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ৪২জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২০জনকে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধারকারী টিম দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস কেন ছিল না বুঝতে পারি না। তিনি বুলেট ট্রেন করছেন। আর তিনি প্রাগঐতিহাসিক যুগের ডিভাইস নিয়ে কাজ করছেন। কোনও সময়ই ঘটনার দায় ওরা নিতে চায় না। আমাদের কাছে যে ইনপুট রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ১৫জনের মৃত্যু হয়েছে। 

দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, উদ্ধারকাজ কেমন চলছে সেটা পরিচালনার জন্য় এসেছে। আবহাওয়া খারাপ থাকা সত্ত্বেও সকলে কাজ করছেন। আমাদের অনুরোধ সকলে যেন একজায়গায় থেকে এই কাজ করে যান। 

এদিকে সূত্রের খবর, মালগাড়ির যে গার্ড ও চালক ছিলেন তাঁরা দুজনেই শিলিগুড়ির। কিন্তু কেন তাঁরা সামনের ট্রেন থাকা সত্ত্বেও মালগাড়িটা চালিয়ে দিলেন সেই প্রশ্নটা উঠছে। সব মিলিয়ে  কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা কার্যত ফের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল রেলের সুরক্ষাকে। 

তবে সূত্রের খবর, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার জেরে একাধিক ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী, বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী ও রাজ্যপাল দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ৫টি বগিকে বাদ দিয়ে বাকি ট্রেন রওনা দিয়েছে শিয়ালদার দিকে।