রাতের মেট্রোয় যাত্রী নেই!‌ বিপুল টাকা লোকসান করে চলছে ট্রেন, পরিষেবা কি বন্ধ হবে?‌

এখন কলকাতা মেট্রো রাতেও চলছে। তাতে বিপুল শহরের মানুষের উপকার হবে ভাবা হয়েছিল। আবার একইসঙ্গে মেট্রোর কোষাগার ভরবে ভেবেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এই ভাবনার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই বলে জানা যাচ্ছে এখন। রাতে মেট্রো কলকাতায় চললেও যাত্রীসংখ্যা একেবারেই কম। দৈনিক গড়ে মাত্র ৬০০ জন। এই পরিস্থিতিতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ এমনই রাতের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বলে সূত্রের খবর। প্রায় একমাস হতে চলেছে রাতে স্পেশাল মেট্রো পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। সপ্তাহে সোমবার থেকে শুক্রবার দমদম এবং কবি সুভাষ দু’‌প্রান্ত থেকেই রাত ১১টায় ছাড়ে এই স্পেশাল মেট্রো। ২৪ মে তারিখ থেকে শুরু হওয়া এই স্পেশাল নাইট সার্ভিসে লাভের মুখ দেখছে না কলকাতা মেট্রো।

করোনাভাইরাসের আগে শেষ মেট্রোর সময় ছিল রাত ৯.৫৫ মিনিট। কিন্তু তারপর সেই সময় এগিয়ে আসে। দমদম ও কবি সুভাষ থেকে শেষ মেট্রোর সময় হয় ৯.৪০ মিনিট। এবার ২৪ মে থেকে আপ ও ডাউন লাইনে রাত ১১টায় পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়। কিন্তু এই এক জোড়া স্পেশাল নৈশ মেট্রো চালাতে মেট্রোর খরচ হয় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এক একটির জন্য ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা করে দৈনিক খরচ। আরও প্রায় ৫০ হাজার টাকার অন্যান্য খরচ রয়েছে। কিন্তু এত খরচ করে পরিষেবা চালু রাখলেও লাভের চেয়ে ক্ষতির মুখই দেখছে কলকাতা মেট্রো।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার বিকল্প জায়গা খুঁজতে হবে’‌, কেন্দ্র–রাজ্যকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

এই রাতের মেট্রো পরিষেবার কর্মযজ্ঞের জন্য দিনে মেট্রোর মোট খরচ হচ্ছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার কাছাকাছি। কিন্তু রাতের যাত্রী কোথায়? এখন মেট্রোর তথ্য বলছে, এই স্পেশাল নাইট সার্ভিস পরিষেবা চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত দিনে গড়ে ৬০০ যাত্রী তা ব্যবহার করেছেন। এই বিষয়ে কলকাতার মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেছেন, ‘‌যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাতে এই মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, রাতে গন্তব্যে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে যাত্রীদের এই পরিষেবায় সুবিধা হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আপ ও ডাউন লাইন মিলিয়ে রাতের মেট্রো চড়ছেন গড়ে ৬০০ জন যাত্রী। তাতে আয় হচ্ছে ৬ হাজার টাকা।’‌

এই হিসাব পাওয়ার পর যা দাঁড়াচ্ছে তা হল—৩ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ঘরে আসছে ৬ হাজার টাকা। প্রত্যেকদিনের হিসেবে ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকার ঘাটতি হচ্ছে। এভাবে কি দীর্ঘদিন রাতে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব?‌ উঠছে প্রশ্ন। কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, যাত্রীদের জন্য মেট্রোর নাইট সার্ভিস চালু করা হলেও, এখনও পর্যন্ত আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। এত বিপুল অর্থ খরচ হলেও যাত্রীদের তেমন সাড়া মিলছে না।’‌